মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হাতে বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণে বাঁচতে পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া কয়েক লাখ রোহিঙ্গাদের মধ্যে আরও ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে নেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘ আলোচনার পর রোহিঙ্গাদের সহায়তার অংশ হিসেবে ভাসানচরের কার্যক্রমে যুক্ত হতে যাচ্ছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর। এ নিয়ে আগামী শনিবার সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন জানিয়েছেন। ইউএনএইচসিআর’র কান্ট্রি ডিরেক্টর এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব এই সমঝোতা স্মারকে সই করবেন বলে জানা গেছে।
রোহিঙ্গা কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে নেওয়ার ব্যাপারে শুরু থেকেই আপত্তি তুলেছিল জাতিসংঘ। বাংলাদেশ সরকার সংস্থাটিকে বোঝানোর জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল। দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর গত জুনে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের সহায়তা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হওয়ায় রাজি হয়। সেই ধারাবাহিকতায় সমঝোতা স্মারক সই হতে যাচ্ছে।বুধবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহসীন একটি গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবার ইউএনএইচসিআর এর সঙ্গে সরকারের এই সমঝোতা স্মারক সই হবে। ভাসানচরে ইতোমধ্যে প্রায় ২০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা নেওয়া হয়েছে। আরও ৮০ হাজার নিয়ে যাব। এ ব্যাপারে ইউএনএইচসিআর আগে যেভাবে কাজ করেছে, একইভাবে কাজ করে যাবে, এ নিয়ে সমঝোতা স্মারক হবে। আশা করি, অক্টোবরের শেষ দিকে কাজ শুরু করব। ভাসানচরে এক লাখের একোমোডেশনের ব্যবস্থা রয়েছে। আপাতত এ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১৭ সালে এবং তারও আগে বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ। কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে এখন ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয়ে রয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ২০ হাজারের মতো রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়া হয়েছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের এই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে, যেখানে আপাতত এক লাখের বেশি রোহিঙ্গার বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।