রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আল-শিফা হাসপাতালে ঢুকেছে ইসরায়েলি সেনারা, চলছে জেরা-তল্লাশি

গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফায় ঢুকে প্রতিটি কক্ষে এবং বেজমেন্টে ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাসের সুড়ঙ্গ এবং অস্ত্র তল্লাশি চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা।

কয়েকদিনের অবরোধ শেষে সেনারা হাসপাতালটিতে ঢুকেছে। হাসপাতালের ভেতরে থাকা একজন সাংবাদিক বুধবার সকালে বিবিসি-কে বলেছেন, ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) এর সেনারা প্রতিটি কক্ষে ঢুকে কর্মী এবং রোগীদের জেরা করছে। বেজমেন্টে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের। সেখানে একজন একজন করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সেনাদের সঙ্গে আছে দোভাষী এবং চিকিৎসাকর্মীরা।

ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযান চালানোর প্রধান নিশানা হয়ে উঠেছে গাজা সিটির আল শিফা হাসপাতাল।

এই হাসপাতালের নিচে, ভূগর্ভে হামাসের একটি কমান্ড সেন্টার আছে বলে অভিযোগ করেছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

কিন্তু নিজেদের অভিযোগে অটল ইসরায়েল বুধবার ভোররাত থেকে এই হাসপাতালটিতে ঝটিকা অভিযান শুরু করে ‘হাসপাতালের নিচে টানেলে থাকা হামাস যোদ্ধাদের’ আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছে।

কয়েকদিন ধরে আল-শিফা হাসপাতাল অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। তারা সেখান থেকে কাউকে বের হতে দিচ্ছে না। বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিহীন হাসপাতালটিতে নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

মৃত রোগীদের বাইরে নেওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতালেই মৃতদেহের স্তূপ জমে আছে। লাশগুলোতে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাধ্য হয়ে মৃতদের সমাহিত করতে হাসপাতালের ভেতরেই গণকবর খোঁড়া হয়।

এর মধ্যেই সেখানে আশ্রয় নেওয়া উদ্বাস্তুদের মধ্যে হামাসের যোদ্ধারা আছে আর হাসপাতালের নিচে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটির কমান্ড সেন্টার আছে অভিযোগ করে সেখানে ঢুকে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

এক প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে জানিয়েছেন, হাসপাতালের ভেতরে ছয়টি ইসরায়েলি ট্যাংক অবস্থান নিয়েছে এবং শতাধিক সেনা জরুরি বিভাগে প্রবেশ করেছে। কিছু সেনা মাস্ক পরা আর তারা আরবিতে চিৎকার করে বলছে, ‘কেউ নড়চড়া করবেন না, নড়াচড়া করবেন না’।

এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হাসপাতালের ভতরে কোনও বন্দুকধারী নেই। ফলে গোলাগুলি চলছে না। সেনারা অবাধে মানুষে আহত, চিকিৎসাকর্মী ও আরও অনেক বাস্তুচ্যুত মানুষে পরিপূর্ণ হাসপাতালের ভেতরে এখানে সেখানে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে গুলির আওয়াজ কানে আসছে। কেউ কেউ লুকিয়ে আছে।

জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ বিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথ এক্সে লিখেছেন, “মানিবক দিক থেকে আমরা হাসপাতালের রোগীর কল্যাণ নিয়ে উদ্বিগ্ন। এমুহূর্তে এ বিষয়টি ধ্বংসের মুখে আছে।”

তিনি লেখেন, “আমরা ইসরায়েলের হামাস নেতাদের খোঁজ বের করার চেষ্টা চালানোর বিষয়টি বুঝি। কিন্তু আমাদের সমস্যা সেটি না। আমাদের সমস্যা হচ্ছে গাজার মানুষদেরকে রক্ষা করা।”

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) বলেছে, এই তল্লাশি জরুরি। গোয়েন্দা তথ্য এবং অভিযানের প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে এটি অপরিহার্য। আইডিএফ বলছে, হাসপাতালে সামরিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে ইসরায়েল হামাসকে ১২ ঘন্টা সময় দিয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে তারা এটা মানেনি।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  

All Rights Reserved ©2024