সোমবার, ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

‘এমপি আনোয়ারুলের লাশ টুকরা টুকরা করে ছড়িয়ে দিয়েছে’

বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার এক সপ্তাহ আগে ভারতে নিখোঁজ হন। এরপর তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছে কলকাতা পুলিশ। তার লাশ টুকরা টুকরা করা হয়েছে বলে ক্যাবচালকের বরাত দিয়ে জানিয়েছে তারা।

 

বুধবার (২২ মে) বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।কলকাতা বিধান নগর পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার মানব শ্রিংলা বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে ক্যাবচালক জানিয়েছে ১৩ মে যে ব্যক্তিকে সে গাড়িতে তুলেছিল তাকে হত্যার পর টুকরা টুকরা করে লাশ ছড়িয়ে দিয়েছে।’

 

তবে তাকে হত্যা করা হয়েছে কিনা, অথবা মরদেহ পাওয়া গেছে কিনা, সেই বিষয়ে কলকাতার পুলিশ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।

 

পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যে ফ্ল্যাটে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সেটি পুলিশ ঘিরে রেখেছে। সেখানে কাউকে এখনও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

 

পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, ওই ফ্ল্যাটে তিনজনকে ঢুকতে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে। এদের মধ্যে একজন মহিলা। তবে ওই তিন জনকে সেখান থেকে বের হতে আর দেখা যায়নি।কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিবা টাউনের একটি ফ্ল্যাট ঘিরে রেখেছে পুলিশ। সেখানে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেছেন, আনোয়ারুল আজিমের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

 

আজিমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন সকালে কলকাতায় ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন বলে নিশ্চিত করেছে কলকাতায় বাংলাদেশের হাইকমিশন।

 

বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুইজনকে বাংলাদেশে আটক করেছে পুলিশ। তারা সম্প্রতি কলকাতা থেকে ফিরেছেন। এদের মধ্যে একজনের নাম আমানুল্লাহ।

 

বাংলাদেশের ওয়ারী জোনের পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন, আনোয়ারুল আজিম কলকাতায় খুন হয়েছে বলে সেখানকার পুলিশ জানিয়েছে।

 

তবে, ঢাকা থেকে দুইজনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেননি তিনি।

 

এর আগে, গত ২০ মে আজিমের খোঁজ করতে গিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তার মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করেছিল। তারা জানতে পেরেছে কলকাতায় বন্ধুর বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তার মোবাইলের লোকেশন একবার পাওয়া গিয়েছিল সেখানকার নিউমার্কেট এলাকায়। এরপর ১৭ মে তার ফোন কিছুক্ষণের জন্য সচল ছিল বিহারের কোনো জায়গায়।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে এই তথ্য পেয়েছে কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস কর্তৃপক্ষ, এমনটাই জানিয়েছিলেন উপ-দূতাবাসের এক কর্মকর্তা, যিনি তার নাম প্রকাশ করতে চাননি।

কলকাতার উত্তর শহরতলি বরাহনগর এলাকার সিঁথিতে যে বন্ধুর বাড়িতে উঠেছিলেন এমপি আজিম। সেই গোপাল বিশ্বাস বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন যে, ১৩ মে তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যে ভাড়া করা গাড়িতে উঠেছিলেন আজিম, সেটির চালকের সন্ধান পেয়েছে বলেই স্থানীয় পুলিশের তরফে তাকে জানানো হয়েছে।গোপাল বিশ্বাস বলেন, ‘পুলিশের কাছে আমি নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলাম। তারা ওই গাড়িটিকে খুঁজে বার করেছে আর চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ওই চালক নাকি পুলিশকে জানিয়েছেন যে সংসদ সদস্যের সঙ্গে একজন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন। এদের দুজনকে তিনি কলকাতা সংলগ্ন নিউ টাউন এলাকায় ছেড়ে দেন ১৩ মে।’

এর বাইরে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ সংসদ সদস্যের ব্যাপারে আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

২০ মে উপ-দূতাবাসের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেস সচিব রঞ্জন সেন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সংসদ সদস্যের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের শনিবার জানানো হয়। তারপরই আমরা ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা খোঁজখবর করছেন এমনটাই আমাদের জানানো হয়েছে।’

আবার শেষবার যেহেতু নিখোঁজ সংসদ সদস্যকে কলকাতায় দেখা গিয়েছিল, তাই কলকাতা পুলিশের সঙ্গেও অনানুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ রাখছিল বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০