রবিবার, ২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কত বছর বয়সে ছেলেকে বিয়ে করানো উত্তম

বিয়ে আল্লাহ তাআলার বিশেষ নেয়ামত। শারীরিক ও আর্থিক সক্ষমতা থাকলে দ্রুত বিয়ে করা আবশ্যক। এতে দ্বীন পালনও সহজ হয়ে যায়। এমনকি বিয়েকে নবীজি দ্বীনের অর্ধেক বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন বান্দা বিয়ে করে, তখন সে তার দ্বীনের অর্ধেক পূরণ করে। অতএব, বাকি অর্ধেকাংশে সে যেন আল্লাহকে ভয় করে।’ (সহিহ আল-জামিউস সাগির ওয়া জিয়াদাতুহু: ৬১৪৮; তাবারানি: ৯৭২; মুসতাদরাক হাকিম: ২৭২৮)

 

বিয়ে চরিত্র রক্ষার হাতিয়ার। আল্লাহ তাআলা বান্দাকে অসংখ্য ফেতনা, ক্ষয়-ক্ষতি, নানা অসুখ-বিসুখ ও সমস্যা থেকেও মুক্তি দান করেন বিয়ের মাধ্যমে। বিয়ের মাধ্যমে রিজিকে বরকত ও জীবনে প্রাচুর্য আসে। আল্লাহ তাআলা বলেন, আর তোমাদের মধ্যে যে পুরুষদের স্ত্রী নেই এবং যে নারীদের স্বামী নেই, তাদের এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎ তাদের বিয়ে দিয়ে দাও। যদি তারা অভাবগ্রস্ত থাকে, তাহলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের ধনী করে দেবেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও সর্বজ্ঞ। (সুরা নুর: ৩২) রাসুল (স.) বলেন, তোমরা বিয়ে করো। স্ত্রীরা স্বীয় ভাগ্যে তোমাদের নিকট সম্পদ টেনে আনবে।’ (মুসনাদে বাজ্জার: ১৪০২)

 

প্রিয়নবী (স.) ২৫ বছর বয়সে খাদিজা (রা.)-কে বিয়ে করেছেন। তখন খাদিজা (রা.)-এর বয়স ছিল ৪০ বছর। (সিরাতুন নববিয়্যাহ ওয়া আখবারুর খুলাফা, ইবনে হিব্বান: ১/৬০; দালায়েলুন নবুয়্যাহ লিল বায়হাকি: ২/৭২; সীরাতে মুস্তফা, ইদ্রিস কান্ধলবি: ৩/২৭৯)

 

সুতরাং কেউ চাইলে নবীজির অনুসরণে ২৫ বয়সে বিয়ে করতে পারেন। তবে শরয়ি দৃষ্টিকোণ থেকে এটাকে সুন্নত বলা যায় না। কারণ সুন্নতের সম্পর্ক হলো- নবীজির নবুয়তের পরের আমলি বিষয়ের সঙ্গে। আর খাদিজা (রা.)-কে নবীজি বিয়ে করেছিলেন নবুয়তের আগে। তাই নবীজির মহব্বতে ২৫ বছর বয়সে বিয়ে করার এখতিয়ার থাকলেও এটি আলাদা কোনো শরয়ি ফাজায়েল মনে করার প্রমাণ নেই। মূলত রাসুল (স.)-এর আদেশ মান্য করাই হলো প্রকৃত সুন্নতের অনুসরণ। আর নবীজির আদেশ হলো- يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمُ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ ‘হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিবাহ করে নেয়। কারণ, বিবাহ চক্ষুকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। আর যে ব্যক্তি তাতে অক্ষম, সে যেন রোজা রাখে, কেনা তা যৌন শক্তিকে হ্রাস করে।’ (বুখারি: ৫০৬৬; মুসলিম: ১৪০০, মেশকাত: ৩০৮০)

 

উক্ত হাদিস থেকে বুঝা যায়, সামর্থ্যবান হলেই বিয়ে করে নেওয়া উচিত। ইসলাম বিয়ের বয়স নির্দিষ্ট করেনি। কারণ শক্তি সামর্থ্য সবার একইরকম হয় না। অনেকে অল্প বয়সেই সামর্থ্যবান হয়ে যায়, আবার অনেকের বাড়তি সময় লাগে। তাই যুক্তিও বলে- বয়স ঠিক না করা, বরং শক্তি-সামর্থ্যে উপযুক্ত হলেই দ্রুত বিয়ে করে নেওয়া।

 

আল্লাহ তাআলা মুসলিম অবিবাহিত যুবক-যুবতীদের যথাসময়ে বিয়ে করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭৩০৩১