কবিঃ কাজী হাবিবুর রহমান
বছরের জন্ম হয় বৈশাখের পহেলা,
হয় যদি শুভদিন নেই বুঝি ঝামেলা।
আকাশেতে মেঘ নেই খাঁ খাঁ রোদ্দুর,
জ্বলা দেখ শ্যামলিমা চোখ যায় যদ্দূর।
এইরুপে রাতদিন গত হলে কদ্দিন
কৃষকের ঘরেঘরে জেগে ওঠে হা হা কার,
মাঠঘাট যেমনি পশুপাখি তেমনি,
মানুষেও সয়নি উদ্যতদিবাকর।
জীবনের মত যেন চায় নীলনভেঃ ঘন,
অখিলেও চায় তারা আশাতীত বারিপাত,
ভুলে যায় ঢেঁর চেয়ে হতে হবে চিতকাত।
চেয়ে চেয়ে রাতদিন হয়তো বা একদিন
অম্বরে ছেয়ে যায় ঘনকালো-ঘনেতে,
শবে যেন প্রাণ আসে কৃষকের মনেতে।
হয়তো বা কদ্দিন বৃষ্টি আর বৃষ্টি,
ভগবানের লীলাখেলায় একি অনাসৃষ্টি!
শুধু কি আর বৃষ্টি? মেলো হিয়াদৃষ্টি,
হেরিবে এ লেখনিতে টক-ঝাল-মিষ্টি।
খন্ডখন্ড মেঘ আর লন্ডভন্ড ভাবটা,
দিয়ে যায় পূর্বাভাষ-আগমনি-ঝাপ্টা।
আসিতেছে সেজেগুজে ভয়ংকরদৈত্য,
ভূবনের প্রাঙ্গনে করিবার নৃত্য।
মহি মা টের পেয়ে হয় স্তব্ধ,
দেহে যেন প্রাণ নেই, নেই সাড়াশব্দ।
পাখিদের লুটোপুটি,মানুষের ছুটোছুটি,
কাননের পশুক’টি আশ্রয় খুঁজছে।
হেরিবেনা বলে মা আঁখিদ্বয় বুজছে।
করে দিয়ে দিবাটা তিমিরের পরদার,
এল বুঝি এইবার তান্ডব সরদার।
সোঁ সোঁ শুনা যায় আগমনি শব্দ,
হুঁ হুঁ করে এসে গিয়ে ধরা করে জব্দ।
শুরু হয় খেল আর জীবের দীল আর
রহে না’ক স্থীর হয় সন্ত্রস্ত,
আপনারে নিয়ে সবে হয়ে উঠে ব্যস্ত।
স্বশরীর থরথর গাছ পালা বাড়ীঘর,
আশপাশ চারিধার ভেঙে হয় চুরমার।
জীবনের প্রত্যাশা মরণের দরজায়,
ভুলে সুখ খুশীমুখ সকলেই হায় হায়।
ধরমার হাঁকডাক, বিদ্যুৎ-বিজলি
চমকায়, ধমকায় উম্মাদ সকলি।
নেচেগেয়ে তারপর দৈত্য শ্রান্ত।
বিশ্রাম নিতে হল এইবার শান্ত।