লেখকঃ এমডি খালেক
জীবনটা খুবই ছোট্ট কিন্তু স্বপ্নটা অনেক বড়!! এই ছোট্ট জীবনে চাওয়া-পাওয়ার দোলায় কত অস্থির আমরা। চোখটা বন্ধ করে চিন্তা করি – জন্মের পরে শুধু চাওয়াটা ছিল কিভাবে হাটতে শিখবো, হাটা শেখার চাওয়াটা পাওয়ার পর, চাওয়ার সাম্রাজ্য বেড়েই চলেছে, চাওয়ার আর শেষ নেই।
তবে সব চাওয়া এক সময় স্থির হয়ে যায়, তখন সারাজীবনের চাওয়া পাওয়ার সব হিসাব মনে হয় বৃথা। আমি যখন স্কুলে পড়ি আমার বাবা আমাদের শহরের বাড়ী ও ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান আমার মেজ ভাইয়ের নামে লিখে দিয়েছিল, আমি সেদিন খুব মন খারাপ করেছিলাম বাবার প্রতি, অন্য সন্তানদের হক বাদ দিয়ে এক সন্তানকে সম্পত্তি লিখে দিচ্ছে বলে কেউ প্রতিবাদ করেনি বাবার বিরুদ্ধে কিন্তু আমি কস্ট পেয়েছিলাম, আমার চোখে পানি দেখে বাবা সেদিন দোয়া করে বলেছিল ” তোর সব চেয়ে বড় শহরে বাড়ী হবে”।
আমি সেই বাবার দোয়ায় আজও সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। কত শহরে বাড়ী করেছি কিন্তু অনেক বাড়ীতে বছরে দুই একদিনও থাকতে পারি না। নিউইয়র্কে আছি, এক মাস ছেলে মেয়েরা বাড়ীতে ছিল, কিছুদিন টরেন্টোর বাড়ীতে মেয়েদের সাথে কাটালাম কিন্তু এখন বাড়ীটা ফাঁকা, বাচ্চারা ইউনিভার্সিটিতে তাদের আবাসস্থলে চলে গেছে। মনে হচ্ছে আমার পৃথিবীটাই ফাঁকা। ভাবছি কি করে কাটাবো বাকী কয়টা দিন, সেইদিন পর্যন্ত যেদিন চাওয়ার সব কিছুর পরিসমাপ্তি ঘটবে।
আমাদের পাখির মত ডানা নেই তবুও উড়তে পারি দূর আকাশে, রাজ হাসের মত চরে বিলে, নদী নালায়, ছুটে চলি সমুদ্র মহাসমুদ্রে – মনটা যেভাবেই চাই কিন্তু মনটা যদি স্থবির হয়ে পড়ে তখন সব চাওয়া, স্বপ্ন ও সাধ তখন হয়ে পড়ে স্থবির। চারিপাশে সব কিছু তেমনি আছে, থাকবে কিন্তু আমি হয়তো হয়ে যাবো -এক গল্পের স্বপ্নদ্রষ্টা – চাওয়া পাওয়ার সাম্রাজ্যের এক হারানো যোদ্ধা।
তবুও আছি, আরও কিছু আশা ও চাওয়ার দোলাচালে তোমাদের ভালবাসা যদি আমার প্রানে স্পন্ধন জাগিয়ে তুলে, আরও কিছুটা পথ চলতে পারি বন্ধু বেশে, বুকে বুক রেখে আর দু’পাশে দু’টি হাত ধরে থাকে শক্ত ভাবে।