সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর বড় ভাইয়ের মেয়ে ম্যারি ট্রাম্পের নামে মামলা করেছেন। ম্যারি ট্রাম্প ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড় ভাই ফ্রেড ট্রাম্প জুনিয়ারের মেয়ে।
নিউইয়র্কের ডাচেস কাউন্টির আদালতে ১০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের ওই মামলায় নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকাকেও আসামি করা হয়েছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, নিউইয়র্ক টাইমসের পুলিৎজার পুরস্কারবিজয়ী একটি রিপোর্টে তার ট্যাক্স রিটার্নের গোপন নথিপত্র হাতানোর জন্য একটি প্রতারণামূলক ছক এবং তাঁর ভাতিজি মেরি ট্রাম্পের মাধ্যমে ওই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করা হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাতিজি এক বই লিখছেন যেটি চাচা সম্পর্কে নানা কেচ্ছা-কাহিনীতে ভরপুর ছিল। বইটির শিরোনামের বাংলা অনুবাদ হচ্ছে: ‘হয় খুব বেশি, নয়তো খুব কম: আমার পরিবার থেকে কীভাবে তৈরি হলো বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক এক মানুষ’।
নিউইয়র্ক টাইমস পরে ট্রাম্পের ওপর এক বিশদ তদন্ত-ভিত্তিক রিপোর্ট প্রকাশ করে। রিপোর্টটি যুক্তরাষ্ট্রে সাংবাদিকতার সেরা পুরষ্কার পুলিৎজার প্রাইজ পায়। এতে দেখানো হয় কীভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘জালিয়াতি’ করে কর ফাঁকি দেন এবং তাঁর বাবার রিয়েল এস্টেট ব্যবসা থেকে বর্তমান মূল্যে ৪০ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ লাভ করেন।
এর জেরেই ট্রাম্প তাঁর ভাতিজি মেরি ট্রাম্প ও নিউইয়র্ক টাইমসের তিন প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কারন যে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল, সেটির মূল সূত্র হিসেবে ছিলেন ৫৬ বছরের মেরি ট্রাম্প। ২০২০ সালে তার প্রকাশিত স্মৃতিকথায় তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ তোলেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট অস্বীকার করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার নিউইয়র্কের একটি আদালতে মামলাটি করেন ট্রাম্প। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদক সুসান ক্রেইগ, ডেভিড বার্স্টো ও রাসেল বুয়েটনারকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভাতিজি মেরির সঙ্গে যোগাযোগ করে এই কাজটি করেছিলেন তারা। মামলার বিবরণীতে বলা হয়, নিউইয়র্ক টাইমসের একদল সাংবাদিক ডোনাল্ড জে ট্রাম্পের কর সংশ্লিষ্ট গোপনীয় নথি পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তারা তাঁর ভাতিজি মেরির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে এই বলে রাজি করেছিলেন যে, তিনি যেন অ্যাটর্নি অফিস থেকে সেসব নথি চুরি করে আনেন।
অভিযোগে বলা হয়, তাদের ওই প্রতিবেদনটি ছিল প্রতিহিংসামূলক। তারা বাদীর অত্যন্ত গোপনীয় ও সংবেদনশীল রেকর্ডগুলো নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে নিজেদের সুবিধামতো কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন। ট্রাম্প পরিবারের আর্থিক বিষয়ে তদন্তমূলক ওই প্রতিবেদনটির জন্য ২০১৯ সালে নিউইয়র্ক টাইমস ও ওই তিন সাংবাদিক পুলিৎজার জিতেছিলেন।
১৯৮১ সালে ৪২ বছর বয়সে মারা যাওয়া রাষ্ট্রপতির বড় ভাই ফ্রেড ট্রাম্প জুনিয়রের মেয়ে মেরি ট্রাম্প এখনও এই মামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।