কবিঃ দেবাশীষ মৃধা
অমিত, তুমি এই নদীতীরে
একাকী সকল ভুলে
এই ভরা বিকেলে
কেন বসে আছো
এতটা নীরবে?
মিতা, আমি ঠিক বসে নেই,
আমি শুনছি বাতাসের গান
দেখছি আকাশের নেচে চলা
খেলছি একাকী মেঘেদের সাথে
কি দারুন এক লুকোচুরি খেলা।
অমিত, তুমি কেন এত লুকোচুরি খেল,
জীবনের সাথে
একাকী নীরবে?
মিতা, নীরবতার ও যে সুর আছে, গান আছে
ছন্দ আছে, ভাষা আছে
তাকে বোঝার জন্য, তাকে জানার জন্য।
ঐ যে দেখ, দেখ,
ঐ সুন্দর ফুটে থাকা ফুল
ও আমাকে বলছে ডেকে,
“আমি ফুটে আছি তোমাকেই আনন্দে দিতে
তুমি পেলে আনন্দ আমি ভাসবো আনন্দে
আমার জীবন, আহাঃ কি দারুন সার্থকতা পাবে।”
অমিত, তোমার হয় না সময় ,
আমার সাথে একটু কথা বলার, অথচ
কি মহা আনন্দে বলছো কথা
আকাশের সাথে, গাইছো গান বাতাসের সুরে, আর
ফুলের আনন্দ নিয়ে যায় তোমাকে যখন তখন
বহু বহু দূরে।
তা বেশ হলো, এবার বলো তুমি কেমন আছো?
মিতা, আমি কেমন আছি জানতে চেয়েছো,
তবে শোনো
আমি জোছনার আলো কুড়িয়ে নিয়ে
আন্ধকারে দেখতে শিখেছি,
আমি সূর্যের আলোকে ভালোবেসে
ফুলের মতো ফুটতে শিখেছি
আমি প্রকৃতির কাছে মৌনতা শিখে
মৌন থাকার চেষ্টা করেছি।
তাই এই মৌনতা নিয়ে মধুর আছি।
তোমার এই মধুর মৌনঅতাকে
আমি চঞ্চলতায় রাংগাতে চাই।
দেখ দেখ ঐ নদীর ঠিক মাঝখান দিয়ে
ছিপ ছিপ দার ফেলে কি মহা আনন্দে
ঐ নৌকোটা চলে যাচ্ছে
ওরা কোথায় যাচ্ছে?
ওরা ঘরে ফিরে যাচ্ছে, মিতা
এই ফেরার মাঝেই ওদের আনন্দ
এই চলার মঝেই ওদের আনন্দ
জীবন এক অনন্ত চলন্ত মন্থরা
সে চলছে আর চলছে,
আবার ফিরে ফিরে আসছে,
সেই সেখানে যেখানে সে শুরু করেছে।
দেখ, কি গভীর কি দুরন্ত গতিতে
পৃথিবীটা ঘুরছে সূর্যকে ভালোবেসে।
নৌকটা এবং ওর মাঝি মাল্লারা যাচ্ছে
ভালোবেসে ভালোবাসার দিকে।
ওরা সেখানে যাচ্ছে যেখানে যক্ষের মতো
অপেক্ষা করছে ওদের ভালোবাসা।
আমরা সবাই যাচ্ছি ফিরে
ভালোবেসে ভালোবাসার দিকে।