যেন দ্বিতীয় জীবন খুঁজে পেল ‘পিনাট বাটার’ আর ‘জেলি’। এগুলি মুরগির নাম। দুটি টার্কি মুরগি। শেষ পর্যন্ত আর রসুইঘর পর্যন্ত যেতে হল না এই পিনাট বাটার আর জেলিকে। কারণ, স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। আসন্ন ‘থ্যাকসগিভিং ডে’ উপলক্ষে শুক্রবার মুরগিগুলোর জন্য ক্ষমা ঘোষণা করায় শেষ প্রাণ রক্ষা পেয়েছে তারা।
‘থ্যাংকসগিভিং ডে’তে হয়তো কোনো মার্কিন পরিবারের ভোজের টেবিলে রোস্ট হয়ে যেতে হত ‘পিনাট বাটার’ আর ‘জেলি’ নামের ওই দুই টার্কিকে। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট বাইডেন পর্যন্তও পৌঁছেছিল তারা। আর তার পরই নতুন জীবন শুরু করার লগ্নে এসে উপনীত হল।
প্রতি বছর নভেম্বর মাসের চতুর্থ বৃহস্পতিবার থ্যাংকসগিভিং ডে পালন করে যুক্তরাষ্ট্র। সেই অনুযায়ী, আগামী বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর দিনটি পালিত হবে। এদিন বাড়িতে বাড়িতে টার্কি মুরগির রোস্ট খাওয়ার চল রয়েছে।
আর হোয়াইট হাউসে প্রতি বছর থ্যাংকসগিভিং ডে-কে সামনে রেখে প্রেসিডেন্টের টার্কি মুরগিকে ক্ষমা করার রীতি পালন করা হয়। এরই অংশ হিসেবে ইন্ডিয়ানার খামারে বড় হয়ে ওঠা পিনাট বাটার ও জেলিকে ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠানো হয়েছিল। শুক্রবার হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পিনাট বাটার ও জেলিকে প্রেসিডেন্টের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়। সেই অনুষ্ঠানেই তাদের জন্য ক্ষমা ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। আর এই ক্ষমার মধ্য দিয়েই রসুইঘরের আগুনে ঝলসানো থেকে রেহাই পেল তারা।
অনুষ্ঠানে মজাচ্ছলে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘মেজাজ কেমন, দেখতে কেমন—এগুলোর ভিত্তিতে পিনাট বাটার ও জেলিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। আমার তো সন্দেহ হচ্ছে তারা টিকা নিয়েছে কি না, সেটাও হয়তো যাচাই করা হয়েছে। তবে হ্যাঁ, এখন আর এ টার্কি মুরগিগুলোকে আগুনে ঝলসানো হবে না। বাইডেন মজা করে আরও বলেন, ‘পিনাট বাটার ও জেলি এ দুটো নাম তো আর মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। আপনাদের কাছে স্বীকার না করে পারছি না, যদিও আমার স্ত্রী চায় না আমি স্বীকার করি, তবু বলছি, মধ্যাহ্নভোজে এ খাবারগুলো খেতে আমি পছন্দ করি।’
লোকমুখে প্রচলিত আছে, প্রেসিডেন্টের ইতিহাসে আব্রাহাম লিংকন প্রশাসনই প্রথম উপহার হিসেবে পাওয়া টার্কি মুরগি ছেড়ে দিয়েছিল। থ্যাংকসগিভিং ডেতে ওই মুরগি দিয়ে প্রেসিডেন্ট পরিবারের নৈশভোজ করার কথা ছিল। লিংকনের ছোট ছেলে বাবাকে টার্কি মুরগি ছেড়ে দিতে অনুরোধ জানানোর পর সেই মুরগি দিয়ে আর ভোজ সারা হয়নি।
হোয়াইটহাউসে টার্কি মুরগিকে ক্ষমা করার আনুষ্ঠানিক প্রচলন শুরু ১৯৮৯ সালে। প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ-এর আমলে এটা শুরু হয়। তার পর থেকে হোয়াইটহাউসে এটি এক নিয়মিত অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।