কবিঃআফতাব মল্লিক
আমি কবিতা লিখতে পারি না।
আমি শুধু এক পৃথিবী ভালোবাসা দিয়ে তোমাকে- সন্ধ্যাতারা করে সাজিয়ে রাখতে পারি ঐ আকাশে।
যেখানে গোধূলির গাল বেয়ে সন্ধ্যা নামে রোজ।
যার কোল ঘেঁষে বলাকার সারি তোমার গান শুনে-
মুগ্ধ হয়ে তোমাকে এত্তো ভালোবাসা দিয়ে যায় অজান্তে।
আমি কবিতা লিখতে পারি না।
আমি শুধু পাহাড় হয়ে তোমার কালো চুলকে-
ঝর্না করে আগলে রাখি সারাদিন।
তোমার চলার পথে হাজার রঙিন ফুলের-
ডালি সাজিয়ে তোমার দিকে আনমনে চেয়ে থাকি অবাক হয়ে!
আমি কবিতা লিখতে পারি না।
আমি শুধু তীর হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে-
তোমাকে ঢেউ করে আমার বুকে আছড়ে পড়তে দিই প্রতিনিয়ত।
কোনো এক অজানা আবেশে তোমার ঘ্রাণ মাখি সারাবেলা।
আমি কবিতা লিখতে পারি না।
আমি শুধু তোমাকে হলুদ পরী করে-
মিতালী পাতিয়ে দিই চরকা বুড়ির সাথে।
তারপর চাঁদের উঠোনে বসে বিভোর হয়ে তোমাদের গল্প শুনি সারারাত।
আমি কবিতা লিখতে পারি না।
আমি শুধু তোমাকে রাতজাগা পাখি করে পাঠিয়ে দিই-
খেলনা হারিয়ে কাঁদতে থাকা কোনো শিশুর কাছে।
আর জানালার বাইরে রাত হয়ে শিয়রে বসে গান শুনিয়ে তোমার ঘুম পাড়ানো দেখি।
আমি কবিতা লিখতে পারি না।
আমি তোমাকে দখিনা বাতাস করে উড়িয়ে দিই ঐ সবুজ মাঠে।
আর ধান শিস হয়ে তোমার আনন্দের দোলায় দুলতে থাকি মন ভরে।
কিংবা ভোরের শিশির হয়ে তোমার মাঝে হারিয়ে যাই দুপুর বেলা।
কিন্তু আমার সব আশাগুলো, আমার না লেখা কবিতার মতোই আজও সবার আড়ালে।
এভাবেই সবার আড়ালে থেকে যাবে চিরকাল!
কারন আমি জানি কেউ আমার মনের আকাশে সন্ধ্যাতারা হবে না কোনোদিন!
কেউ আমার কোলে ঝর্না হয়ে আমার ব্যাথাগুলোকে শীতল করবে না কখনো!
কেউ শান্ত্বনার ঢেউ হয়ে আমার অস্থির বুকে আছড়ে পড়বে না কোনো সকালে।
জানি, তোমরাও ভাববে না আমার কথা-
তোমাদের ব্যস্ত জীবন ফেলে রেখে।
আমি না হয় সারাজীবন থেকে যাবো সবার আড়ালে !
আমার না লেখা কবিতার মতোই!