রাজুব ভৌমিক,নিউইর্য়কঃ আমেরিকার নিউইর্য়কে পরিচিত একটি নাম ফাতিমা নাজনীন প্রিসিলা। তিনি ইতিমধ্যে একজন সফল ব্লগার এবং ইউটিউবার হিসেবে দেশে ও বিদেশে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তার চ্যানেল ও পেজে প্রিসিলা নামটি ব্যবহারের কারনে তিনি লক্ষ লক্ষ ভক্তের কাছে প্রিসিলা নামেই পরিচিত।
প্রিসিলার জন্ম কুমিল্লায়, তার পূর্বপুরুষরা সবাই কুমিল্লার এবং পরিবারের অনেকেই এখনো কুমিল্লায় থাকেন। যুক্তরাষ্ট্রে প্রিসিলার মা, বাবা ও এক চাচা এবং উনার পরিবার আছেন। প্রিসিলার বাবা একজন চিকিৎসা বিষয়ক গ্রন্থ প্রণেতা এবং একটা কর্পোরেশনের কর্মকর্তা, মা ও একটা কোম্পানীর ম্যানেজার। ছোটবেলায় প্রিসিলা হলিউডের মুভি দেখতে পছন্দ করত এবং তাতেই অভিনয়ের ইচ্ছা হয়। সেজন্য প্রিসিলা স্কুলে নাচ , গান ও অভিনয়ের দলে যোগ দেয়। বিভিন্ন পুরস্কারও তিনি পান। এতে তার সুযোগ হয় অভিনয় করার এবং তার আগ্রহ দেখে বাবা হলিউডের একটা প্রতিষ্ঠান নিউইর্য়ক ফিল্ম একাডেমীতে অভিনয় ও মডেলিং কোর্সে ভর্তি করিয়ে দেয়।
কোর্স শেষ করার পর নানা ব্যস্ততার কারনে অভিনয়ে সম্পূর্ণভাবে মনযোগ দেয়া সম্ভব হয় নি। তিনি বলেন, “মাদার তেরেসার কিছু গল্প , কিছু কথা আমার জীবনে বিশেষ প্রভাব ফেলে। তাছাড়া প্রিন্সেস ডায়নার জীবনী অনুপ্রাণিত করে আমায়। তাই সোস্যাল মিডিয়াতে আসা। এ আসা ভাল কিছু করার স্বপ্ন নিয়ে। অভিনয় বা মডেলিং এ নিয়মিত হচ্ছি না। থাকতে চাই সামাজিক কাজ কর্ম নিয়ে। ক্ষুদার্ত মানুষের কষ্ট সহ্য করতে পারি না। সহ্য করতে পারিনা অসুস্থ্য মানুষের কষ্ট। নিজে তেমন কিছু করতে পারি না, শুধু চেয়ে চেয়ে দেখি।”
বর্তমানে প্রিসিলা সাংবাদিকতা ও রাজনীতি বিজ্ঞান নিয়ে পড়ছে। তার আইন বিষয়ে পড়ার ইচ্ছা আছে। প্রিসিলা বলেন, “পরিবার ও আত্মীয় স্বজন এবং অনেক অপরিচিত মানুষ বিভিন্নভাবে আমায় সহযোগীতা করেন। অনেকে মনে করেন আমি অনেক টাকা উপার্জন করি। তাই খরচ করি। বিষয়টা এমন না। অনেক কথা আছে যা মনে হলে কষ্ট পাই। হয়তো একসময় সব প্রকাশ করতে পারব। প্রিসিলার ব্লগার হওয়াটা বা তার সামাজিক কাজে অংশগ্রহন করতে তাকে অনেক বাধা ও বিপত্তি অতিক্রম করতে হয়। তিনি বলেন, “কেউ আমার কাজকে সমর্থন করে, কেউবা আবার বলে মেয়ে মানুষের এসবের কি দরকার। মেয়েরা তো ঘরে থাকবে। সব মানুষের মতামতকে শ্রদ্ধা করি। প্রধান্য দেই। ভাল কিছু যদি করতে না পারি তাহলে দ্রুত হারিয়ে যেতে হবে। ভাল কিছু করার অপেক্ষায় আছি।”
প্রিসিলা তার নিজের উদ্যোগে এই পর্যন্ত একুশটির ও বেশি হুইল চেয়ার জনস্বার্থে বিতরন করেন। উপরন্তু দেশের বিভিন্ন জেলায় ত্রিশটির বেশি টিউবওয়েল নির্মানে সহায়তা করেন। বাংলাদেশকে এবং বাংলাদেশের মানুষকে প্রচণ্ড মিশ করেন। প্রিসিলা বলেন, “বাংলাদেশকে খুব মিস করি। আগামী বছর দেশে আসার ইচ্ছা আছে। দেশে এসে কিছুদিন দেশের সবচেয়ে গরীব মানুষগুলোর সাথে কাটাব। উনাদের জীবন কিভাবে চলে, কিভাবে উনারা উনাদের সংসার চালান এসব নিজের চোখে দেখব। তাদের এতিমদের সাথে সময় দেব | বৃদ্ধাশ্রমে সময় দেব।”