পরীমণিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডে নেওয়ার বিষয়ে বিচারিক আদালতের দুই বিচারকের দেওয়া ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি হাই কোর্ট। উচ্চ আদালত মনে করছে, তাদের ব্যাখ্যায় হাই কোর্টকে উল্টো হেয় করা হয়েছে। এ বিষয়ে দুই বিচারকের কাছে আবার ব্যাখ্যা চেয়ে আদেশের জন্য ২৯ সেপ্টেম্বর তারিখ দিয়েছে আদালত। গতকাল বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ আদেশের এই তারিখ দেয়। অন্যদিকে নিম্ন আদালতে হাজিরা দিয়েছেন পরীমণি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দিপু। তাদের বিরুদ্ধে বনানী থানায় করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে গতকাল নির্ধারিত তারিখ থাকলেও তদন্ত কর্মকর্তা ব্যর্থ হওয়ায় আগামী ১০ অক্টোবর নতুন তারিখ ঠিক করেছে আদালত। এর আগে মঙ্গলবার ক্ষমা চেয়ে হাই কোর্টে লিখিত ব্যাখ্যা পাঠান ঢাকার দুই মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস ও আতিকুল ইসলাম। লিখিত বক্তব্যে তারা জানান, ভুল হয়েছে অসাবধানতাবশত। গতকাল তাদের ব্যাখ্যা হাই কোর্টে উপস্থাপন করা হয়। ব্যাখ্যায় বিচারিক আদালতের দুই বিচারক বলেন, রাষ্ট্র মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। মামলার আসামি শামসুন নাহার স্মৃতি ওরফে পরীমণি বিদেশি মদ, এলএসডি, আইসসহ গ্রেফতার হন। উপরিউক্ত বিষয়ে সার্বিক বিবেচনায় আমি দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করি। ওই আদেশের ক্ষেত্রে কোনোরূপ ত্রুটি-বিচ্যুতি নিতান্তই অনিচ্ছাকৃত এবং সরল বিশ্বাসের ভুল। আদালতে পরীমণির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও মজিবুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইয়াহিয়া দুলাল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান। শুনানিতে হাই কোর্ট বলে, দুই বিচারক যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন এবং আমাদের প্রচলিত আইনের বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডের বিষয়ে তারা যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই। এ কারণে এ বিষয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর আদেশ দেওয়া হবে। হাই কোর্ট আরও বলে, ওনাদের (দুই বিচারকের) ত্রুটি হয়েছে এটা তারা বিশ্বাস করেন না। তার মানে হাই কোর্টকে আন্ডার মাইন (হেয়) করা হয়েছে। পরে বিষয়টি নিয়ে দুই বিচারকের কাছে আবারও ব্যাখ্যা চায় আদালত। পরীমণির মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন ১০ অক্টোবর : পরীমণি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দিপুর বিরুদ্ধে বনানী থানায় করা মাদক মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ আগামী ১০ অক্টোবর নির্ধারণ করেছে আদালত। গতকাল মামলাটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা ব্যর্থ হন। তাই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত সিকদারের আদালত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছে। একই আদালতে গতকাল পরীমণি ও আশরাফুল ইসলাম দিপু হাজিরা দেন। পরীমণির আইনজীবীরা জানান, তারা পরীমণির জব্দ জিনিসপত্র ফেরত চেয়ে দুটি আবেদন করেছেন। পরীমণির ব্যবহৃত এসব জিনিস অভিযানের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জব্দ করেছিল। ৪ আগস্ট বনানীর ১২ নম্বর রোডে পরীমণির বাসায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। এ সময় ওই বাসা থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ, মদের বোতলসহ পরীমণি ও আশরাফুল ইসলাম দিপুকে গ্রেফতার করা হয়।