সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যায় শিক্ষার্থী প্রিয়েতেনিয়া পিয়া পাখির প্রতি ভালোবাসা দেখে অবিভূত পরিবেশ ও প্রাণি অধিকার কর্মীরা। পাখির প্রতি তাঁর ভালোবাসা থেকে নগরের দক্ষিণ সুরমার খোজারখলা এলাকা বিলুপ্তপ্রায় ডাহুক পাখি ক্রয় করে এটি অবমুক্ত করা ব্যবস্থা করেন ওই ছাত্রী।
খবর পেয়ে রোববার (৩ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বাপা সিলেটের যুগ্ম সম্পাদক ছামির মাহমুদ পাখি স্থানীয় একটি জলাশয়ের কচুরিপানায় ডাহুক পাখিটি অবমুক্ত করেন।
জানা গেছে, খোজারখলা এলাকায় একজন ব্যক্তি ডাহুক পাখিটি বিক্রির জন্য পায়ে বেঁধে রাখেন। এসময় পাখিটি পালানোর জন্য বার বার রশির বাধ খোলার জন্য ঠোট দিয়ে চেষ্টা করছিল। এই দৃশ্যটি দেখেন ওই এলাকায় বসবাসকারী সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনির্ভাসিটির আইনবিভাগের ছাত্রী প্রিয়েতেনিয়া পিয়া। পাখি এভাবে বেঁধে রাখা অন্যায় জানিয়ে পিয়া ডাহুকটি ছেড়ে দেয়ার জন্য শিকারীর প্রতি অনুরোধ করেন। কিন্তু শিকারী পাখিটি অবমুক্ত করে দিতে রাজি না হলে পাখির প্রতি ভালোবাসা থেকে পিয়া ডাহুকটি ৬০০টাকা দিয়ে ক্রয় করেন ছেড়ে দেয়ার জন্য।
পরে এটি অবমুক্ত করতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিমের সাথে যোগাযোগ করেন তিনি। খবর পেয়ে সেখানে পরিবেশ সংগঠক আব্দুল করিম কিম, সাংবাদিক নেতা ছামির মাহমুদ ও মিঠু দাস জয় সেখানে গিয়ে পাখিটি খোজারখলা এলাকার একটি জলায় অবমুক্ত করেন।
এসময় এক প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী প্রিয়েতেনিয়া পিয়া বলেন, পাখি শিকার ও খাওয়া দন্ডনীয় অপরাধ এবং পাখির উপকারিতা স্কুল-কলেজের পাঠ সূচিতে উল্লেখ থাকলে নতুন প্রজন্মের পাখির প্রতি ভালোবাসা জন্মাবে। তাহলে কেউ এভাবে পাখি শিকার করে দোকানের সামনে বেঁধে রাখার সাহস পাবেনা।
পাখির প্রতি ভালোবাসা দেখানোয় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম পিয়াকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আর কেউ এভাবে পাখি বিক্রি করতে দেখলে তাকে জানালে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে পাখি উদ্ধার করে অবমুক্ত করার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান। তিনি বলেন এভাবে ঘাটের টাকা দিয়ে পাখি ক্রয় করা আর লাগবেনা। আমরা শিকারীকে বনবিভাগের মাধ্যমে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।
জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছামির মাহমুদ বলেন, পিয়ার মতো নতুন প্রজন্ম যদি পরিবেশ-প্রকৃতি ও পাখির প্রতি ভালোবাসা দেখায় তাহলে দেশের পশু-পাখি রক্ষার পাশাপাশি আমাদের জীববৈচিত্র রক্ষা পাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগ থেকেও আমরা রক্ষা পাবো। তাই পরিবেশ ও জীববৈচিত্র রক্ষায় আমরা পিয়াকে অনুসরণ করতে পারি।