
বামপন্থী বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতাদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি থেকে সরানো হয়েছে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত নেতাদের ছবি।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালযের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ছবিগুলো নামিয়ে ফেলেন।
জানা গেছে, জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ‘৩৬ জুলাই: আমরা থামবো না’ শীর্ষক কর্মসূচির অংশ হিসেবে যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত নেতাদের ছবির প্রদর্শনী করে ইসলামী ছাত্রশিবির। টিএসসি প্রাঙ্গণে আজ থেকে তিন দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী হওয়ার কথা ছিল।
এ সময় বামপন্থী নেতাকর্মীরা ‘রাজাকার ও স্বৈরাচার, মিলেমিশে একাকার’, ‘এই বাংলার গাদ্দার, হাসিনা ও আজাহার’, ‘নিজামী ও আজাহার, এই বাংলার গাদ্দার’, ‘মা মাটি মোহনা, রাজাকারের হবে না’, ‘রাজাকার ও স্বৈরাচার, এই বাংলার গাদ্দার’—এমন নানা প্রতিবাদী স্লোগান দেন।
‘বিচারিক হত্যাকাণ্ড’ শিরোনামে আয়োজিত এই আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে স্থান পায় জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের ছবি। তাদের মধ্যে ছিলেন দলটির আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, শুরা সদস্য মীর কাসেম আলী এবং নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। এছাড়া প্রদর্শনীতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছবিও প্রদর্শিত হয়।
ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রী নউরিন সুলতানা তমা বলেন, ‘৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবস উদ্যাপনে চিহ্নিত গণহত্যাকারী রাজাকারদের ছবি টাঙিয়ে আমি মনে করি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত করেছে। গণহত্যাকারীদের ছবি দিয়ে তারা স্পষ্ট বার্তা দিলেন, গণঅভ্যুত্থানকে তারা ব্যবহার করতে চাইছে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীতার বার্তা বাস্তবায়নে।’
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমাদের ৩ দিনব্যাপী আয়োজনের ফটোফ্রেমগুলোর একটা অংশ নিয়ে কুতর্ক এবং মব সৃষ্টি করা হয়েছে। এই বিষয়ে আমাদের অবস্থান সুস্পষ্ট।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমাদের জাতীয় ইতিহাসে একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ গৌরবজনক অধ্যায়। বাকশাল কায়েম করে মুক্তিযুদ্ধকে প্রথমবারের মতো প্রশ্নবিদ্ধ করেছে শাহবাগের পুর্বসূরীরা। ২য় দফায় ১৩ সালে শাহবাগ কায়েম করে আওয়ামীলীগকে ফ্যাসিবাদ বানায় এই শাহবাগ। শাহবাগ ও বাকশালের অপরাধীদের বিরুদ্ধে আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান জারি থাকবে।’
ঘটনাস্থলে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন অভিযোগে এনেছে। আমরা শিবিরের ছেলেদের ডেকে সেগুলো সরিয়ে ফেলেছি। তারা আমাদের সহযোগিতা করেছে।র ধন্যবাদ জানাই।’