নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে সূত্রাপুর থেকে পাশ করেছিলেন, সেই সূত্রাপুরে দাঁড়িয়ে আমি আপনাদেরকে বলবো। দল করতে গিয়ে যারা নিজের বিবেক-ঈমান অর্থের কাছে বিক্রি করে দেয় তারা মানুষ হতে পারে না, তারা অমানুষ।
বুধবার পুরান ঢাকার জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম শুভ জন্মদিন উপলক্ষে’ বিশেষ দোয়া এবং এতিম, অসহায় ও দুস্থদের মাঝে উন্নতমানের খাদ্য-বস্ত্র ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, আন্দোলনের নামে আবারও মানুষ পোড়ানোর পরিকল্পনা করলে দেশে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে তাদেন বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আপনারা আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করলেন, বাস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলেন, বাস যাত্রীদেরকে পুড়িয়ে দিলেন, রেভিনিউ অফিসে আগুন দিলেন। এই অন্তর্ঘাতমূলক কাজগুলোকে আন্দোলন বলেন?
বিএনপির সমালোচনা করে নানক আরো বলেন, মির্জা ফখরুল বড় বড় কথ বলেন। একটা কাজ দেখান, যে কাজটি আপনার প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়া করেছে, অথবা বেগম খালেদা জিয়া করেছে। আমাদের একটি কাজ দেখান বাংলাদেশে। সারাদিন বললেও শেষ হবে না, শেখ হাসিনার উন্নয়নের ফিরিস্তি। মির্জা ফখরুল লম্বা-লম্বা কথা বলে, ঢাকা দখলের ভয় দেখায়। বলে কি, সারা বাংলাদেশ আমাদের দখলে ছিলো। শুধু ঢাকা দখল করতে পারি নাই বলে, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা যায় নাই।
এসময় নানক বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আছেন। একটি কথা আল্লাহকে হাজির নাজির জেনে নিজের বিবেককে জিজ্ঞেস করে বলেন তো, রাস্তা দিয়ে হাঁটেন বিয়ে-শাদিতে যান, সুন্নতে খাৎনায় যান, মসজিদে যান, জুম্মা পড়তে যান, কোথাও কি শেখ হাসিনার সততা নিয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়? উত্থাপিত হয় আমাদেরকে নিয়ে, আমাদের কথাবার্তা, চালচলনে মানুষ ব্যথিত হয়, ব্যথিত হয়ে জনগণ শেখ হাসিনা থেকে দূরে সরে যায়। শেখ হাসিনাকে দূরে সরানো যাবে না। শেখ হাসিনা জনগণের নেত্রী, বিশ্ব নেত্রী।
তিনি আরও বলেন, দুঃসময়ের নেতাকর্মী ডুকরে ডুকরে কাঁদে, যখন দেখে নতুন একজন আসছে সবদিক দিয়ে স্বাস্থ্য ভালো, তাদের নিয়ে নেতা চলে আমাদেরকে চিনে না, তাদের উপরে আল্লাহ’র গজব পড়বে। যারা শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রতারণা করবে তাদের উপরেও আল্লাহ’র গজব পড়বে। দলের নেতাকর্মীদের সর্তক করে নানক বলেছেন, ক্ষমতাসীন দল করবেন, ক্ষমতায় দাপট দেখাবেন, শেখ হাসিনার অর্জনকে বিসর্জ্জন দিবেন, তাদেরকে এ দল করতে দেয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর হাতকে আরো শক্তিশালী করতে যোগ্য নেতার প্রয়োজন রয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে যোগ্য নেতাকে যোগ্য পদ স্থান দিতে হবে। তাহলে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেখানো লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির সদস্য সচিব সুজিত রায় নন্দীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি প্রমুখ।