সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুককে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাবিরোধী সংঘাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টের তথ্য প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধের জন্য মিয়ানমারের বিচার করতে চাওয়া তদন্তকারীদের কাছে তথ্য হস্তান্তর করতে ব্যর্থ হয় ফেসবুক। এ নিয়ে গতকাল বুধবার ওয়াশিংটন ডিসির বিচারক ফেসবুকের সমালোচনা করেন।
আদালত বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ তদন্তের কাজে সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হয়েছে ফেসবুক।তারা বলছে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের আইনবিরুদ্ধ। যা ইলেকট্রনিক যোগাযোগ পরিষেবাগুলোকে ব্যবহারকারীদের তথ্য প্রকাশ করা থেকে বিরত রাখে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক বলেন, যে পোস্টগুলো ডিলিট করা হয়েছে সেগুলো আইনের আওতায় পড়বে না। তাই এগুলো শেয়ার না করলে রোহিঙ্গাদের ওপর যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে তা আরো বাড়তে পারে। তিনি বলেন, ফেসবুক প্রাইভেসি অধিকারের মাধ্যমটি বিড়ম্বনায় ভরা।
টুইটারে মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী শ্যানন রাজ সিং এই সিদ্ধান্তকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে অভিহিত করেছেন। টুইটারে একটি পোস্টে তিনি বলেছিলেন যে এটি ‘আধুনিক নৃশংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রাসঙ্গিকতার অন্যতম উদাহরণ।’
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের গণহত্যা সংক্রান্ত কনভেনশন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করে গাম্বিয়া। এ মামলার অংশ হিসেবে গাম্বিয়া ফেসবুকের কাছে রেকর্ড চাইছে।
এদিকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা একটি সশস্ত্র বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং নিয়মতান্ত্রিক নৃশংসতাকে অস্বীকার করছে। এর আগে, ২০১৭ সালে সামরিক অভিযানের মুখে সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। ওই সময় রোহিঙ্গাদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, গণহারে হত্যা ও নির্যাতন করা হয়, বহু রোহিঙ্গা নারী ধর্ষণের শিকার হন।