বিএনপির ৫ নেতা স্বেচ্ছায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে (বিএনএম) যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব ড. মো. শাহজাহান। তিনি বলেন, বিএনপিকে ভাঙার কোনো চেষ্টাই করছে না বিএনএম। বিএনপির ৫ নেতা স্বেচ্ছায়ই এসেছেন।
২৫ নভেম্বর শনিবার রাজধানীর গুলশানে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি ছেড়ে আসা নেতারা হলেন ফরিদপুর-১ আসনের শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর, বরগুনা-২ আসনের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রহমান, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের শামসুর সালেহীন, ঝিনাইদহ-৪ আসনের মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব। নিরাপত্তার কারণে বাকি একজনের নাম প্রকাশ করেনি বিএনএম।
এ ছাড়া জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য জাফর ইকবাল সিদ্দিকীও বিএনএমে যোগ দিয়েছেন। তিনি নীলফামারী-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
মো. শাহজাহান বলেন, বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচি পালন করায় ওই নেতারা আমাদের দলে এসেছেন।
তিনি বলেন, শুরুতেই আমাদের কিংস পার্টি বলা হচ্ছে। অনেকে প্রশ্ন করেন, এত বিশাল অফিস কীভাবে করলেন। আমরা হাসিমুখে এসব প্রশ্নের উত্তর দিলেও দুঃখ পাই। আমাদের নামের সঙ্গে কিংস পার্টি জুড়ে দিয়েন না।
গত শুক্রবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, সরকার ‘গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে’ ব্যবহার করে বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো থেকে লোক ভাগিয়ে নিচ্ছে। নতুন দল করে, জেতানোর আশ্বাস দিয়ে মনোনয়ন দিচ্ছে, টাকা-পয়সার লোভ দেখাচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিএনএমের মহাসচিব শাহজাহান বলেন, কারও পৃষ্ঠপোষকতা, কারও আনুকূল্য, কারও প্রভাবে বিএনএম গড়ে ওঠেনি। বিএনপিকে ভাঙাও আমাদের উদ্দেশ্য নয়। পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করতে চাই। বিএনপি এসব কথা অজুহাত হিসেবে বলছে।
রাজনৈতিক মহলে প্রচার ছিল, শনিবার সাবেক সংসদ সদস্যসহ অন্য দলের বেশ কয়েকজন নেতা বিএনএমে যোগদান করবেন। এ উপলক্ষে বড় আয়োজন করারও পরিকল্পনা ছিল। তবে তা হয়নি। আজ দলীয় কার্যালয়ে ছোট পরিসরে যোগদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নির্বাচন এগিয়ে এলেও দলটিতে এখনো চেয়ারম্যান পদে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি। এ বিষয়ে বিএনএমের মহাসচিব শাহজাহান বলেন, এখন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রয়েছেন। চেয়ারম্যান যেকোনো সময় এসে যোগ দিতে পারেন। আমরা চমকের অপেক্ষায় আছি।
সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব আরও বলেন, আজকে বিএনপির সাবেক ৫ সংসদ সদস্যসহ মোট ৬ জন যোগ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি থেকেও অনেক নেতা যোগ দিয়েছেন বিএনএমে। আরও অনেকে যোগ দেবেন বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে বিএনএম। সরকার ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) এখনো পুরোপুরি আস্থা অর্জন করতে পারেনি, শেষ পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি না হলে তাতে অংশগ্রহণের বিষয়টি পুনরায় বিবেচনায় নেবে দল।
উন্নয়নের রাজনীতি দিয়ে দেশ চলবে না, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমানে জি হুজুরে চলছে দেশ, গণতন্ত্র রক্ষা ও নির্বাচনী ধারা অব্যাহত রাখতেই বিএনএম নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাইছে বলেও জানান ড. শাহজাহান।
বিএনএম থেকে জানানো হয়, শনিবার বিকাল পর্যন্ত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য দলের ২৯০টির মতো মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সদ্য যোগ দেওয়া বিএনপির সাবেক চারজন সংসদ সদস্য। ২০ নভেম্বর এই চারজন যোগ দেওয়ার পর আজ আরেকজন সাবেক সদস্য বিএনএমে যোগ দিলেন।