জায়েদ খান। ঢাকাই সিনেমার এ নায়ক ২০০৮ সালে ‘ভালোবাসা ভালোবাসা’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে অভিনয় জগতে পদার্পণ করেন। ২০১২ সালে ‘আত্মগোপন’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে নায়ক হিসেবে পথচলা শুরু হয়। এই সিনেমায় তৎকালীন জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর জায়েদের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন। সাম্প্রতিক ব্যস্ততা ও নানা প্রসঙ্গে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি।
বর্তমানে কী নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটছে?
সামনে আমার কয়েকটি সিনেমা মুক্তি পাবে। এর মধ্যে রয়েছে সোনার চর, বাহাদুর। দেশের বাইরের একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ নিয়ে কথা হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে হয়তো কাজ হতে পারে। এখনো চূড়ান্ত কিছু হয়নি। আর সামনে দুবাই, লন্ডনে শো আছে। আবার জাতীয় নির্বাচন তো আছেই।
শিল্পী সমিতির জন্য কী কাজ থেকে দূরে সরে গেছেন মনে হয়?
শিল্পী সমিতি করতে গিয়ে আমি কাজে মন দিতে পারিনি। পুরো সময় এটা নিয়েই গেছে। সারা দিন সমিতি নিয়ে পড়ে থাকতাম। এখন নিজের কাজ নিয়ে ফোকাস করছি। দিন শেষে আমি একজন নায়ক। পর্দায় না থাকলে ভুলে যাবে মানুষ।
জায়েদ খানকে দেশের নির্মাতারা কাজে লাগাতে পারেনি মনে হয় কি না?
এটা শতভাগ সত্য। আমাকে যেভাবে উপস্থাপন করার দরকার, সেভাবে যদি কাজে লাগাত, আমি অনেক ভালো কাজ করতে পারতাম। আমার কাজের প্রতি আকাঙ্ক্ষা আছে, ক্ষুধা আছে। আমি সিনেমাতেও খুব ভালো একটা সুযোগ পাইনি, অন্যরা যেভাবে পেয়েছে। আমাকে যদি সুন্দর গল্প দিয়ে কাজে লাগাত, খুব ভালো করতে পারতাম। আমি জানি, আমার দর্শক আছে, মানুষ আমাকে দেখতে চায় সেভাবে। এটা নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই। কারণ, সবকিছুই ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল আর ভাগ্য আল্লাহর হাতে।
নির্মাতা ফারুকীর সঙ্গে একটি কাজে কথা শোনা যাচ্ছে। সে প্রসঙ্গে বলুন।
আসলে কাজ করলে তো জানতে পারবেন। আর যদি কাজ করি, তাহলে অন্য এক জায়েদ খানকে মানুষ আবিষ্কার করবে, যা কল্পনা করতে পারেনি। এটা একটা রহস্য। রহস্য রহস্যের মতো করে থাকাই ভালো।
ওটিটি প্রসঙ্গে আপনার বক্তব্য কী?
ওটিটি আমাদের দেশে একটা নতুন প্ল্যাটফর্ম। ওটিটিতে ভিন্ন ধরনের গল্প বলার চেষ্টা করা হয়, মেধা এবং মননের প্রকাশ করার অনেক বেশি সুযোগ আছে। শিল্পীদেরও আগ্রহ আছে প্ল্যাটফর্মটি নিয়ে। এই প্ল্যাটফর্মটা দাঁড় করার জন্য পুরো ইন্ডাস্ট্রি মিলে গড়ার চেষ্টা করছি। সেই পরিশ্রমটাই শিল্পীরা করছেন। ফারুকী ভাইয়ের মতো যারা নির্মাতা আছেন, তারা কিন্তু আমাকে নিয়ে ভাবতে পারেন। সমস্ত শিল্পীরা এখন ওটিটির দিকে ঝুঁকেছে। সিনেমা দিয়ে এখন আলোচনায় থাকার সুযোগ খুব কম।
অভিনেতা ও ব্যক্তি জায়েদ খানকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবে?
নিজেকে নিজে ব্যাখ্যা করতে তো অনেক সময় লাগবে। একটা কথা নিজেকে নিয়ে জোর গলায় বলতে পারি, জায়েদ খান সৎ, স্বচ্ছ। যার মধ্যে কোনো লুকোচুরি নেই। অভিনেতা জায়েদ খানের মধ্যে ব্যক্তি জায়েদ খানও আছে। শিল্পীদের তাই থাকে। যে শিল্পীসত্তা আমার মধ্যে আছে, তাকে বাদ দিয়ে তো আমি নই! মাঝেমধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করি ভিন্নভাবে। যে আমিকে আমি চিনি না।
আপনাকে নিয়ে বরাবর সমালোচনা হয়। বিষয়টি কীভাবে দেখেন?
যারা আমাকে নিয়ে সমালোচনা করে, ট্রল করে তারাই আবার ফলো করে। আমি কিন্তু তাদের বলছি না আমাকে ফলো করতে। আমাকে ভালো না লাগলে ইগনোর করতে পারেন। আর একটা মানুষ যখন ভালো কিছু করবে, তখন তার সমালোচনা হবেই। কোনো বিষয়ের সমালোচনা ইচ্ছে করে বানানো হয় আবার কোনোটা বানোয়াট। আসলে এসব বিষয় নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। পাছে লোকে কত কিছুই বলে। এসব মাথায় নিয়ে চলা যাবে না।
অভিনয়ের ক্ষেত্রে মঞ্চ কতটা ভূমিকা রাখে বলে মনে হয়?
অভিনয়েরপুরোটাই ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে। মঞ্চ বা যেখানে থেকেই আসুক। পরিশ্রম থাকলে ভালো ফল আসবেই। সুযোগটাকে কাজে লাগাতে হবে। কখনো দর্শক গ্রহণ করবে, কখনো করবে না। এটাই স্বাভাবিক। পরিশ্রম করেই এ পথটা পাড়ি দিতে হবে।
মিডিয়ায় কাজ করা ঝুঁকি মনে করেন কি না?
ক্যারিয়ার হিসেবে পুরো মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি একটা ঝুঁকি। দর্শক কখন কার প্রজেক্ট কীভাবে গ্রহণ করবে, সেটা কেউ বলতে পারবে না। এই ক্যারিয়ার পুরোই ঝুঁকি। আর ঝুঁকি না নিয়ে কোনো কাজই হয় না।
সিনেমা নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
দর্শকদের খুব ভালো গল্প আর সুন্দর চরিত্র উপহার দিতে চাই। এমন কিছু কাজ করে যেতে চাই, যেটা আমার সিগনেচার হয়ে থাকবে। অভিনয় ছাড়া ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কিছু নেই। অন্য কোনো প্রফেশনে সুইচ করব তেমন কোনো চিন্তাও করতে পারি না। শেষ পর্যন্ত অভিনয় করে যেতে চাই।
বিয়ে কবে করছেন?
বিয়ে কবে করছি সেটা বলতে পারছি না এ মুহূর্তে। তবে আল্লাহ চাইলে শিগগিরই হয়ে যাবে। জন্ম মৃত্যু বিয়ে তো মানুষের হাতে থাকে না। যেদিন আল্লাহ কপালে লিখবে সেদিন হবে।