চলে যাবে রাজকীয় মর্যাদা, হারাবেন রাজপরিবারের উত্তরাধিকার, তবু দীর্ঘদিনের ভালোবাসার মানুষের কাছে থেকে সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপনকেই বেছে নিতে যাচ্ছেন জাপানের রাজকুমারী মাকো।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ূয়া ওই প্রেমিকের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত থাকা রাজকুমারীর বিয়েতে সম্প্রতি সম্মতি দিয়েছেন দেশটির ক্রাউন প্রিন্স ফুমিহিতো। আর প্রেমের জন্য রাজপ্রাসাদ, রাজ উপাধি ও পরিবারসহ সব ছাড়তে হচ্ছে এই রাজকন্যাকে।
জাপানের নিয়ম অনুযায়ী, জাপানি রাজবংশের বাইরে সাধারণ পরিবারের কাউকে বিয়ে করার ক্ষেত্রে রাজপুত্র কিংবা রাজকুমারীকে রাজকীয় পদমর্যাদা হারাতে হয় এবং রাজপ্রাসাদের সবকিছুই ত্যাগ করতে হয়।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এ নিয়ে নানা বিতর্ক চললেও অবশেষে সাধারণ পরিবারের প্রেমিক কোমুরোর সঙ্গেই বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন জাপানের প্রিন্সেস মাকো। বিয়ের পর স্বামী কেই কোমুরোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাবেন তিনি। সেখানে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন কোমুরো। আগামী ২৬ অক্টোবর তাদের বিয়ের তারিখ ঠিক করা হয়েছে।
জাপানের রাজপরিবারে প্রেমের দায়ে রাজপ্রাসাদ হারানোর ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে ২০০৫ সালে সম্রাট আকিহিতোর মেয়ে সায়াকো রাজপরিবারের বাইরে সাধারণ এক নগর পরিকল্পনাবিদকে বিয়ে করে রাজপরিবার ছেড়েছিলেন। ১৫ বছর পর ফুপুর পথ অনুসরণ করে নতুনভাবে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন ২৮ বছর বয়সী মাকো। এর আগে ২০১৮ সালে রাজকুমারী মাকো প্রেমিক যুক্তরাষ্ট্রের ফরদাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কেই কোমুরোকে বিয়ে করছেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর কোমুরোর মায়ের এক আর্থিক জটিলতায় সে সময়ে বিয়ে আটকে যায়। প্রেমের দায়ে এখন রাজশিরোপা হারাবেন মাকো। তাকে হারাতে হবে রাজকুমারীর মর্যাদা। ছাড়তে হবে রাজপরিবার। দূরে কোথাও স্বামীর সঙ্গে বসবাস করতে হবে। সাধারণ নাগরিকদের মতো ভোটাধিকার থাকবে তার। তাদের ছেলেমেয়েরা রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে বিবেচিত হবেন না। তবে এককালীন কিছু অর্থ পাবেন মাকো। এতে জাপানের রাজকীয় উত্তরাধিকার নিয়ে ফের বিতর্ক উঠতে পারে। জাপানি রাজকন্যাদের পরিবারের বাইরে কারোর সঙ্গে বিয়ের নিয়ম নেই। তবে বর্তমান রাজকন্যাকে বিয়ে করার মতো রাজপরিবারে কোনো পুরুষ সদস্যও নেই। অন্যদিকে দেশটিতে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হিসেবে নারীদের মনোনয়ন দেওয়ার সুযোগ নেই।