ফারজানা চৌধুরীঃ যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান স্টেটের একজন বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবেন বলেছেন মিশিগান হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভ আব্রাহাম আইয়্যাশ।
বুরহান চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে আইয়্যাশ বলেন, “আমি জনাব চৌধুরীকে জানাতে চাই, সহ প্রতিবেশী হিসাবে আপনার মর্যাদা ও সম্মান পুনরুদ্ধার করা নিশ্চিত করতে এবং আপনার ন্যায়বিচার যাতে অস্বীকার না করা হয় তা নিশ্চিত করতে আমরা আপনার এবং আপনার পরিবারের পাশে দাঁড়াবো।”
বিচারককে উদ্দেশ্য করে আইয়্যাশ বলেন, “ক্যান্সারে আক্রান্ত একজন ৭২ বছর বয়সী বৃদ্ধ ব্যক্তিকে কারাগারের ভয় দেখাতে পারবেন না এবং বলতে পারবেন না যে তাদের নিজেদের জন্য লজ্জিত হওয়া উচিত।”
তিনি বলেন, “যখন আমাদের নির্বাচিত কর্মকর্তারা অসম্মানের সাথে আচরণ করেন, নির্বাচিত কর্মকর্তারা সম্প্রদায়ের সদস্যদের অপমান করেন, তখন আমাদেরকে প্রতিবাদ করতেই হবে।” আইয়্যাশ বলেন, তিনি মিশিগান বিচারিক মেয়াদ কমিশনে একটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করতে চৌধুরী পরিবারের সাথে কাজ করবেন।
হ্যামট্রামেক সিটিতে বাড়ির মালিক, লিজগ্রহীতা, ভাড়াটে অথবা বাসা যার দখলে আছে অথবা যার দখলে কোনো স্থাপনা বা দালান আছে, তাদের সম্পত্তির সঙ্গে সংযুক্ত সাইড-ওয়াক বা ফুটপাত পরিষ্কার রাখতে হয়। অপরিস্কার থাকলে জরিমানা দিতে হয়।
ক্যান্সার রোগের সাথে লড়াই করা বুরহান চৌধুরী মিশিগান স্টেটের হ্যামট্র্যামেক সিটির বাসিন্দা। তাঁর বাড়ির সাইড-ওয়াক অপরিস্কার ছিল। যারজন্য বিচারক অ্যালেক্সিস জি. ক্রট তাকে ১০০ ডলার জরিমানা করেন।
ভার্চুয়াল আদালতে শুনানির সময় বুরহান চৌধুরী বিচারককে ব্যাখ্যা করেছেন যে তিনি ঘাসের রক্ষণাবেক্ষণ করতে অক্ষম হয়েছেন এবং তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত। তখন ৩১ তম জেলা বিচারক অ্যালেক্সিস জি. ক্রট তাকে বলেছেন, “আপনার নিজের জন্য লজ্জিত হওয়া উচিত। আপনি কি সেই ছবি দেখেছেন? এটা লজ্জাজনক। সেইসাথে বিচারক ক্রট চৌধুরীকে কারাগারের ভয়ও দেখিয়েছেন।
শুনানির এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। নেটিজেনরা চৌধুরীর সাথে ক্রটের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে কেউ কেউ এটিকে নিষ্ঠুর, অযাচিত ঘটনা এবং অনেকেই ক্রটকে অপসারণের জন্য সমাবেশ করছেন। তার অপসারণের আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত একটি পিটিশন ২ লাখেরও বেশি স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছে।
বিচারক ক্রটকে ২০১৬ সালে প্রাক্তন গভর্নর রিক স্নাইডার বেঞ্চে নিযুক্ত করেছিলেন। ২০১৮ সালে হ্যামট্রামেক সিটির ভোটারদের দ্বারা তিনি নির্বাচিত হন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া এই ভিডিও দেখে এপিআইএ এর নির্বাহী পরিচালক রেবেকা ইসলাম বলেন, “এই ভিডিও দেখে আমি অবাক হয়েছি। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমি আমার পিতামাতার জন্য ব্যাখ্যা করতে যেতাম এবং আমি বিচারকের দ্বারা এতটাই ভয় পেয়ে যেতাম যে আমি আমার পিতামাতার জন্য ব্যাখ্যা বা অনুবাদও করতে পারতাম না। আমি জানতাম যে এটি সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘটছে, কিন্তু আমরা এটিকে এভাবে একটি পাবলিক প্ল্যাটফর্মে দেখবো সেটা আশা করিনি। সত্যিই এই ভিডিওটি খুবই বিরক্তিকর এবং হতাশাজনক ছিল।”