খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিনকে ঘিরে ঘোরাঘুরিতে আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ। এমনকি করোনার সম্পূর্ণ ডোজ টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যেও এসময় দ্রুতগতিতে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ চিকিৎসা উপদেষ্টা এবং মহামারি ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউসি এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
স্থানীয় সময় রবিবার এনবিসি চ্যানেলের মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে ফাউসি বলেন, এটি নিয়ে কোনোই সন্দেহ নেই যে, অতিদ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সক্ষমতা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের রয়েছে। মার্কিন সরকারের মহামারি বিষয়ক এই উপদেষ্টার ভাষায়, করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্টটি এখন কার্যত ‘সারা বিশ্বে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে’।
এদিকে ওমিকন ভ্যারিয়েন্টের ছড়িয়ে পড়া রুখতে লকডাউনসহ নানা বিধিনিষেধ আরোপ করছে বিশ্বে বহু দেশ। ক্রিস্টমাসকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই ভ্রমণ বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ফ্রান্স ও জার্মানি। এছাড়া রোববার থেকে কঠোর লকডাউন কার্যকর করেছে নেদারল্যান্ডস।
একই সময়ে করোনা টিকার বুস্টার ডোজ প্রয়োগের কাজ আরও জোরদার করেছে বিশ্বের বহু দেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকার বুস্টার ডোজ ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া রুখতে ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত সুরক্ষা দিতে পারে।
রোববার ড. অ্যান্থনি ফাউসি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে ওমিক্রনে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে করে দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপরে মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের হাসপাতালগুলো মারাত্মক চাপের মুখে পড়তে যাচ্ছে।’
তবে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথও বলে দিয়েছেন ড. ফাউসি। তিনি বলছেন, ওমিক্রন থেকে নিরাপদে থাকতে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব অবলম্বন করাসহ মানুষকে করোনা বিষয়ক সতর্কতাগুলো মেনে চলতে হবে। এছাড়া করোনা টিকার ডোজ সম্পন্ন করা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বুস্টার ডোজ নিয়ে নিতেও মার্কিনিদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬ হাজার ৭৫১ জন এবং মারা গেছেন ১০৯ জন।
এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫ কোটি ১৭ লাখ ৬৫ হাজার ৭১৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৮ লাখ ২৭ হাজার ৩২৩ জন মারা গেছেন।