ফারজানা চৌধুরীঃ সাহিত্যের নানা শাখায়ও পহেলা ফাল্গুন বা ঋতুরাজ বসন্তকে নিয়ে রয়েছে নানা রচনা। কবির ভাষায় পহেলা ফাল্গুন ‘ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক আজ বসন্ত’। প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালি বসন্ত উৎসব পালন করে আসছে।
রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ওয়ারেনে সেলিনা খানের বাড়িতে একদল বাংলাদেশি মহিলা আয়োজন করেন ফাল্গুনী আড্ডার। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বসন্ত উৎসব (পহেলা ফাল্গুন) উদ্যাপনের আয়োজন করা হয়।
প্রবাসী নতুন প্রজন্ম ও স্থানীদের মাঝে বাংলাদেশি সংস্কৃতি তুলে ধরাই ছিল আয়োজকদের মূল উদ্দেশ্য। পুষ্প রানী ও সেলিনা খানের উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়।
প্রবাস জীবনেও দেশীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া এনে দিতে পয়লা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের পাশাপাশি আয়োজন করেন বাংলাদেশি পিঠা উৎসব।
সন্ধ্যা ৬ টার পর থেকেই দেশীয় পোশাক হলুদ, লাল শাড়ী ও সালোয়ার কামিজ পরে হাজির হতে থাকে মহিলারা। চারপাশে তুষার আর বরফের স্তুপ ঠেলে উৎসব স্থলে পৌঁছাতেই চোখে পড়ে থরে থরে সাজানো পিঠা। তবে চারপাশে তুষারে ঢাকা শ্বেত শুভ্রতা আর কনকনে শীতে নতুন ধানের চালের গুঁড়ায় তৈরি পিঠার অতুলনীয় স্বাদ নিতে ভুলেননি মিশিগানের হ্যামট্রামেক, ওয়ারেন, স্টারলিং হাইটস ও ট্রয় সিটির আশপাশের বাংলাদেশি মহিলারা।
লোকসমাগম দেখে মনে হয় পরবাসে এ যেন ছোট্ট একটি বাংলাদেশ। খাবার মেন্যুতে ছিল বিরিয়ানি, চিকেন রোস্ট এবং বিফ কারি। প্রতিটি মহিলা এক থালা করে পিঠা নিয়ে হাজির হয়েছেন। উৎসবে ভাপা, পুলি, চিতই, পাটিসাপটা, চুঙ্গা পিঠা, গোলাপফুল পিঠা, লবঙ্গ লতিকা, রসফুল পিঠা, জামদানি পিঠা, হাঁড়ি পিঠা, ঝালপোয়া, ঝুরি পিঠা, ঝিনুক পিঠা, সূর্যমুখী পিঠা, নকশি পিঠা, নারকেল পিঠা, নারিকেলের ভাজা পুলি, পায়েশ, দুধ চিতইসহ বিচিত্র সব পিঠার সমারোহ ঘটে। সেই সাথে ছিলো পায়েস ও চটপটি। ছিল ময়মনসিংহ, বরিশাল, বগুড়া, নোয়াখালী, রাজশাহী, চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী নানা ধরনের পিঠাও। পিঠার সেই মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে পুরো বাড়ি।
সবার অংশগ্রহণে উৎসবের আনন্দটা আরো বেড়ে যায়। আয়োজক আগত অতিথিদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ ব্যক্ত করেন। আগত অতিথিরা এই আয়োজনকে সাধুবাদ জানান ও ভবিষ্যতেও এই ধরনের অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতা প্রত্যাশা করেন।