দেশে এখন কুয়াশা ঘেরা প্রকৃতি আর ভোরের শিশির জানান দিচ্ছে শীত আসছে। অর্থাৎ ঘি খাওয়ার উপযুক্ত সময় চলে এসেছে। গরম ভাতে ঘি দিয়ে খাওয়া বাঙালিদের অন্যতম প্রিয় একটি খাবার। বাঙালিদের কাছে ঘি মানেই আকর্ষণের একটা জায়গা। ঘি যে কেবল গরম ভাতের সঙ্গেই খাওয়া হয় তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন সুস্বাদু খাবারে ঘি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ছোটবেলায় অনেকেই মায়ের কাছে শুনেছেন যে, ঘি খেলে বুদ্ধি বাড়ে। আসলেই তাই, এ ঘি-তে রয়েছে অনেক ধরনের উপকারিতা। বিশেষ করে শীতকালে নানাভাবে শীরের যত্ন নেয় ঘি।
‘ইন্ডিয়ান জার্নাল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’- এর প্রতিবেদন অনুসারে, শীতকালীন সর্দি-কাশি কমাতে, শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে ঘি-য়ের জুড়ি মেলা ভার।
চিকিৎসকদের মতে, শীতকাল ঘি খাওয়ার একেবারে উপযুক্ত সময়। শরীর উষ্ণ রাখতে ঘি বেশ কার্যকরী। ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে সমৃদ্ধ ঘি দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখে।
শীতকাল বলে নয়, বছরের সব ঋতুতেই যাদের ত্বক শুষ্ক থাকে, তাদের জন্য ঘি অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। খাওয়ার পাশাপাশি, এক ফোঁটা ঘি যদি সারা মুখে মালিশ করেন, তাহলে ত্বকে বাড়তি জেল্লা দেবে। এছাড়াও, শীতকালে ঘি খেলে ত্বকও হয়ে উঠবে কোমল ও মসৃণ। ঘি ত্বকে ভিটামিন ই ও ভিটামিন কে সরবরাহ করে। ফলে ত্বক হয় উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত।
ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ঘি ত্বকের অকাল বার্ধক্য রোধ করে। ত্বককে করে তোলে সজীব। এছাড়াও, ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতেও ঘি বেশ উপকারী।
করোনা আবহে অনেকেই বাড়ি থেকে কাজের ফলে আলাদা করে ত্বকের পরিচর্যা করার সময় পাচ্ছেন না। ফলে অত্যধিক পরিশ্রমের ছাপ পড়ছে চোখ-মুখে। কাজের ফাঁকে ক্লান্তি অনুভব করলে চোখের চারপাশে আঙুল দিয়ে হালকা করে ঘি মালিশ করে নিতে পারেন। নিমেষে চোখের ক্লান্তি দূর হবে। আপনাকেও দেখাবে ঝরঝরে ও প্রাণবন্ত।
শীতকাল পড়তেই ঠোঁট ফাটার সমস্যায় নাজেহাল হয়ে পড়েন অনেকেই। তাদের জন্য ঘি হতে পারে মহৌষধি। রাতে শোয়ার আগে বা গোসল করে উঠে আঙুলে করে ঘি নিয়ে ঠোঁটে লাগাতে পারেন। সহজেই উপকার পাবেন।
এছাড়াও ঘিয়ে রয়েছে নানাবিধ উপকার। যেমন- গ্যাস ও হজমের সমস্যা দূর করে, চোখের জ্যেতি বাড়ায়, খিদে বাড়াতে সাহায্য করে, মানসিক উদ্বেগ ও চাপ কমায়, যেকোনো রকম ক্ষত দ্রুত শুকিয়ে দিতে সাহায্য করে।