মঙ্গলবার, ১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আগামীকাল দুপুরেই প্রত্যাহার হচ্ছেন পটিয়া থানার ওসি

আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুর ১২টার মধ্যে চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের আশ্বাস দেয়ার পর সড়ক থেকে সরে দাঁড়ালেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির নেতাকর্মীরা। বুধবার (২ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবীব পলাশ তার কার্যালয় থেকে সড়কে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলার পর তারা সড়ক থেকে সরে যান।

বুধবার (২ জুলাই) বেলা সাড়ে ৩টা থেকে আন্দোলনকারীরা খুলশী থানার সামনে ডিআইজি কার্যালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। তিন ঘণ্টা পর সন্ধ্যা সাতটার দিকে সড়ক ছাড়েন তারা।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি সঞ্জয় সরকার বলেন, ‘আগামীকাল (৩ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা সময় নিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে পটিয়ার ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ডিআইজি। আশ্বাস পাওয়ার পর তারা সড়ক থেকে সরে যান।’

পুলিশ কর্মকর্তা সঞ্জয় সরকার আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন ডিআইজি। তদন্তের পর জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বুধবার বিকেল ৩ টার দিকে নগরের খুলশী ৩ নম্বর রোড এলাকায় পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করে সংগঠন দুটির নেতাকর্মীরা। তারা ডিআইজিকে কার্যালয়ের বাইরে এসে তাদের সঙ্গে কথা বলার দাবি জানান। কিন্তু এতে ডিআইজির সম্মতি না পেয়ে তারা সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে জাকির হোসেন সড়কে অবরোধ শুরু করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির নেতাকর্মীরা।

এনসিপি নেতাদের অভিযোগ, ছাত্রলীগ নেতা দীপংকরকে স্থানীয় জনতা আটক করে পটিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলেও, তার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। উল্টো এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গেলে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ হামলা চালায়। এতে অন্তত ১৫জন নেতাকর্মী আহত হন।

এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগর সংগঠক রিয়াদ বলেন, ‘যেখানে জনগণ এক দুর্নীতিগ্রস্ত ছাত্রনেতাকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে, সেখানে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ওপর চড়াও হয়েছে। এটি প্রমাণ করে পুলিশ বাহিনী এখন রাজনৈতিক রক্ষাকবচে পরিণত হয়েছে। তাই আমরা দ্রুত পুলিশ সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’

মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে পটিয়া থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে চার পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে পটিয়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগ নেতা দীপংকর তালুকদারকে আটক করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। পরে তাকে পটিয়া থানা চত্বরে নিয়ে আসা হয়। তবে ওই ছাত্রলীগ নেতার নামে মামলা না থাকায় পুলিশ গ্রেপ্তার করতে চায়নি। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের উত্তেজনা দেখা দেয় এবং পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ ওই ছাত্রলীগ নেতাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় এবং নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা করে।

পুলিশ আরও জানায়, ছাত্রলীগ কর্মী দীপঙ্কর দে (২৯) রাঙামাটি জেলার বনরূপা বাজার এলাকার মৃত গৌরাঙ্গ দে এর ছেলে। তবে তার পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ার সুচক্রদন্ডি ২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায়। তাকে ৫৪ ধারায় (সন্দেহজনক হিসেবে) বুধবার বেলা ৩টায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।

শেয়ার করুনঃ