
বাজারে গেলে ‘হতাশা’ বেড়ে যায় বেসরকারি চাকরিজীবী মো. সাইফুল ইসলামের। উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে এমনিতেই দিশেহারা, সেখানে খাবারের খরচ সামাল দিতে ‘নূন আনতে পান্তা ফুরায়’ দশা তার। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রসঙ্গে এমনটাই জানাচ্ছিলেন কদমতলীর এ বাসিন্দা।
সাইফুল বলেন, ‘জীবনযাত্রার খরচ বাড়লেও আয় বাড়ছে না। বাজারে গিয়ে জিনিসপত্রের দাম শুনলে হতাশা আরও বেড়ে যায়। মাছ-মাংস দূরে থাক, চাল, ডাল, তেল ও লবণ মসলা কেনার পর নিরামিষ খাবারে খরচ মেলাতেই হিমশিম খেতে হয়। তরিতরকারির যেটাতেই হাত দেই সেটাতেই আগুন। করলা, বেগুন নাইবা বললাম, সামান্য পেঁপে ৫০ টাকার নিচে নেই। দুটি টমেটো কিনতে ৫০ টাকা উধাও।’
একই এলাকার অটোরিকশাচালক মো. কাশেম মোল্লা বলেন, ‘খরচ কুলাতে না পেরে মাছ-মাংস-ডিম বাদ দিয়েছি। নিরামিষও এখন হিসাব করে খেতে হচ্ছে। এক সময়ের সস্তা কাঁচাকলা, পেঁপে ও কচুতে এখন আগুন জ্বলছে। শাকের দাম যতটা না বেড়েছে তার চেয়ে আঁটি ছোট হয়েছে। ছোট চিংড়ি এখন গরুর মাংসের সমান দাম।’
খাবারের পেছনে ব্যয় বাড়ায় সাইফুল ও কাশেমের মতো চাপে রয়েছেন আরও অনেকে। জিনিসপত্রের দামের সঙ্গে আয়ও বাড়লে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কিছুটা সহজ হতো। কিন্তু দেশে মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধির হার কম। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত মে মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি (পয়েন্ট টু পয়েন্ট) ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশে ঠেকেছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরও বেশি; ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। সেখানে মজুরি বৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৮৮
শতাংশ। খাবারের পেছনে খরচের চাপ এখন অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে মনে করেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান। তিনি বলেন, ‘এক দিকে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, অন্যদিকে ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। তাই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যেমন পদক্ষেপ প্রয়োজন, তেমনি মানুষের আয় বাড়াতে কর্মসংস্থান তৈরিতে গুরুত্ব দিতে হবে। কৃত্রিমভাবে যাতে পণ্যমূল্য বেশি না বাড়তে পারে সেদিকেও নজর রাখতে হবে।’
বাজার চিত্র বলছে, গরু, খাসি ও মুরগির মাংস এবং ডিমের দাম এখন নিম্ন আয়ের নাগালের বাইরে চলে গেছে। বাজারে ব্রয়লারের কেজি ১৮০ টাকার নিচে মিলছে না। এক ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। রুই-কাতলা দূরে থাক, পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়ার কেজিতে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা গুনতে হচ্ছে।
এদিকে নিরামিষের বাজারেও স্বস্তি নেই। করলা, বেগুনসহ বেশ কয়েকটি সবজির দাম বর্তমানে ১২০ টাকায় ঠেকেছে। শতকে ঠেকেছে বরবটি, কাঁকরোল ও শসা। টমেটো ও গাজরে হাত ছোঁয়ানো দায়। পটোল, ঝিঙা, ধুন্দলের কেজি ৬০ টাকা ও কচুর লতি ৮০ টাকা। কাঁচামরিচের দাম ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি। কুমড়ার শাকের আঁটি ৩০ টাকা, পাট শাক ১৫ টাকা ও শাপলা লতার আঁটিও ২০ টাকা।
কারওয়ান বাজারে সবজি সরবরাহকারী বলরাম চন্দ্র ও রবি চন্দ্র জানান, টানা বৃষ্টির প্রভাবে সবজির দাম মোকামেই চড়া। সরবরাহও স্বাভাবিকের তুলনায় কম এখন। আর কাঁচামরিচের মৌসুম শেষ। কাঁচা পণ্য হওয়ায় প্রতিদিনই এসব পণ্যের দাম ওঠানামা করে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে আবার কমে আসবে। আলু বিক্রেতা মো. বিলাল হোসেন জানান, হিমাগার থেকে ছাড়কৃত আলুর দামও বাড়ছে। এ বাজারে খুচরায় আলু ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাইরে ৬৫ টাকা।
এদিকে খুচরায় খোলা সয়াবিনের কেজি এখন ১৬২ টাকা। গুঁড়া মরিচের ছোট প্যাকেট (৫০ গ্রাম) ৪০ থেকে ৫৫ টাকা, একই ওজনের হলুদের গুঁড়ার প্যাকেট ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। জিরাসহ অন্যান্য মসলায় খরচ বেড়েছে। রান্নার লবণের কেজি ৪০ থেকে ৪২ টাকা। এদিকে ২০০ টাকার নিচে রসুন ও ৩০০ টাকার নিচে আদা নেই। দেশি পেঁয়াজের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা হয়েছে।
শ্যামবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী কানাই সাহা বলেন, এক দিকে দেশি পেঁয়াজে টান, অন্যদিকে ভারতে দাম বেশি হওয়ায় আমদানি কম। দুইয়ে মিলে দাম বেড়েছে। রাজধানীতে সরবরাহে কমতি নেই। তবে স্থানীয় পর্যায়ে বেশি দামে কেনা পড়ছে। শ্যামবাজারে পাইকারিতে আজও (শুক্রবার) দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রতি কেজি ৯০-৯৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। গতকাল যা ৮৫-৮৭ টাকা ছিল। গত মাসে যা ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাজারে গেলে ‘হতাশা’ বেড়ে যায় বেসরকারি চাকরিজীবী মো. সাইফুল ইসলামের। উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে এমনিতেই দিশেহারা, সেখানে খাবারের খরচ সামাল দিতে ‘নূন আনতে পান্তা ফুরায়’ দশা তার। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রসঙ্গে এমনটাই জানাচ্ছিলেন কদমতলীর এ বাসিন্দা।
সাইফুল বলেন, ‘জীবনযাত্রার খরচ বাড়লেও আয় বাড়ছে না। বাজারে গিয়ে জিনিসপত্রের দাম শুনলে হতাশা আরও বেড়ে যায়। মাছ-মাংস দূরে থাকÑ চাল, ডাল, তেল ও লবণ মসলা কেনার পর নিরামিষ খাবারে খরচ মেলাতেই হিমশিম খেতে হয়। তরিতরকারির যেটাতেই হাত দেই সেটাতেই আগুন। করলা, বেগুন নাইবা বললাম, সামান্য পেঁপে ৫০ টাকার নিচে নেই। দুটি টমেটো কিনতে ৫০ টাকা উধাও।’
একই এলাকার অটোরিকশাচালক মো. কাশেম মোল্লা বলেন, ‘খরচ কুলাতে না পেরে মাছ-মাংস-ডিম বাদ দিয়েছি। নিরামিষও এখন হিসাব করে খেতে হচ্ছে। এক সময়ের সস্তা কাঁচাকলা, পেঁপে ও কচুতে এখন আগুন জ্বলছে। শাকের দাম যতটা না বেড়েছে তার চেয়ে আঁটি ছোট হয়েছে। ছোট চিংড়ি এখন গরুর মাংসের সমান দাম।’
খাবারের পেছনে ব্যয় বাড়ায় সাইফুল ও কাশেমের মতো চাপে রয়েছেন আরও অনেকে। জিনিসপত্রের দামের সঙ্গে আয়ও বাড়লে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কিছুটা সহজ হতো। কিন্তু দেশে মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধির হার কম। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত মে মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি (পয়েন্ট টু পয়েন্ট) ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশে ঠেকেছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরও বেশি; ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। সেখানে মজুরি বৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৮৮
শতাংশ। খাবারের পেছনে খরচের চাপ এখন অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে মনে করেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান। তিনি বলেন, ‘এক দিকে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, অন্যদিকে ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। তাই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যেমন পদক্ষেপ প্রয়োজন, তেমনি মানুষের আয় বাড়াতে কর্মসংস্থান তৈরিতে গুরুত্ব দিতে হবে। কৃত্রিমভাবে যাতে পণ্যমূল্য বেশি না বাড়তে পারে সেদিকেও নজর রাখতে হবে।’
বাজার চিত্র বলছে, গরু, খাসি ও মুরগির মাংস এবং ডিমের দাম এখন নিম্ন আয়ের নাগালের বাইরে চলে গেছে। বাজারে ব্রয়লারের কেজি ১৮০ টাকার নিচে মিলছে না। এক ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। রুই-কাতলা দূরে থাক, পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়ার কেজিতে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা গুনতে হচ্ছে।
এদিকে নিরামিষের বাজারেও স্বস্তি নেই। করলা, বেগুনসহ বেশ কয়েকটি সবজির দাম বর্তমানে ১২০ টাকায় ঠেকেছে। শতকে ঠেকেছে বরবটি, কাঁকরোল ও শসা। টমেটো ও গাজরে হাত ছোঁয়ানো দায়। পটোল, ঝিঙা, ধুন্দলের কেজি ৬০ টাকা ও কচুর লতি ৮০ টাকা। কাঁচামরিচের দাম ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি। কুমড়ার শাকের আঁটি ৩০ টাকা, পাট শাক ১৫ টাকা ও শাপলা লতার আঁটিও ২০ টাকা।
কারওয়ান বাজারে সবজি সরবরাহকারী বলরাম চন্দ্র ও রবি চন্দ্র জানান, টানা বৃষ্টির প্রভাবে সবজির দাম মোকামেই চড়া। সরবরাহও স্বাভাবিকের তুলনায় কম এখন। আর কাঁচামরিচের মৌসুম শেষ। কাঁচা পণ্য হওয়ায় প্রতিদিনই এসব পণ্যের দাম ওঠানামা করে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে আবার কমে আসবে। আলু বিক্রেতা মো. বিলাল হোসেন জানান, হিমাগার থেকে ছাড়কৃত আলুর দামও বাড়ছে। এ বাজারে খুচরায় আলু ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাইরে ৬৫ টাকা।
এদিকে খুচরায় খোলা সয়াবিনের কেজি এখন ১৬২ টাকা। গুঁড়া মরিচের ছোট প্যাকেট (৫০ গ্রাম) ৪০ থেকে ৫৫ টাকা, একই ওজনের হলুদের গুঁড়ার প্যাকেট ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। জিরাসহ অন্যান্য মসলায় খরচ বেড়েছে। রান্নার লবণের কেজি ৪০ থেকে ৪২ টাকা। এদিকে ২০০ টাকার নিচে রসুন ও ৩০০ টাকার নিচে আদা নেই। দেশি পেঁয়াজের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা হয়েছে।
শ্যামবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী কানাই সাহা বলেন, এক দিকে দেশি পেঁয়াজে টান, অন্যদিকে ভারতে দাম বেশি হওয়ায় আমদানি কম। দুইয়ে মিলে দাম বেড়েছে। রাজধানীতে সরবরাহে কমতি নেই। তবে স্থানীয় পর্যায়ে বেশি দামে কেনা পড়ছে। শ্যামবাজারে পাইকারিতে আজও (শুক্রবার) দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রতি কেজি ৯০-৯৫ টাকা বিক্রি হয়েছে। গতকাল যা ৮৫-৮৭ টাকা ছিল। গত মাসে যা ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।