মঙ্গলবার, ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আশ্রয়ণের ঘর কারা ভেঙেছে, সেই তালিকা হাতে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে দেওয়া ঘর কারা হাতুড়ি শাবল দিয়ে ভেঙে মিডিয়ায় প্রচার করেছে, সেই তালিকা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, “সব থেকে দুর্ভাগ্য হল, আমি যখন সিদ্ধান্ত নিলাম, প্রত্যেকটা মানুষকে আমরা ঘর করে দেব, আমাদের দেশের কিছু মানুষ এত জঘন্য চরিত্রের, আমি কয়েকটা জায়গায় হঠাৎ দেখলাম যে কি ঘর ভেঙে পড়ছে, কোন জায়গায় ভাঙা ছবি- ইত্যাদি দেখার পরে পুরো সার্ভে করালাম কোথায় কী হচ্ছে। “সেখানে আমরা প্রায় দেড় লাখের মতো ঘর তৈরি করে দিয়েছি। ৩০০টা ঘর বিভিন্ন এলাকায় কিছু মানুষ নিজে থেকে যেয়ে হাতুড়ি, শাবল দিয়ে সেগুলো ভেঙে ভেঙে তারপর মিডিয়ায় সেগুলোর ছবি তুলে দিচ্ছে। এখন তাদের নাম ধাম এগুলো একদম এনকোয়ারি করে সব বের করা হয়ে গেছে।”
সেই পুরো প্রতিবেদন এখন হাতে আছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “যারা, একটা গরিবের জন্য ঘর করে দিচ্ছি, তারা এইভাবে যে ভাঙতে পারে, সেই ছবিগুলো দেখলে… ।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি পরিবারের তালিকা করে তাদের জমিসহ ঘর উপহার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কিন্তু বর্ষার শুরুতে কয়েকটি স্থানে ভূমি ধসে ঘর ভেঙে পড়ায় এবং কয়েকটি ঘরে ফাটল দেখা দেওয়ায় নির্মাণের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পাশাপাশি অনিয়ম-দুর্নীতিরও কিছু অভিযোগ আসে।

অভিযোগ তদন্ত করে সে সময় পাঁচজন সরকারি কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়। অনিয়ম যাচাইয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাঁচটি দলকে বাড়িগুলোর নির্মাণশৈলী ও গুণগতমান, অনুমোদিত ডিজাইন ও প্রাক্কলন অনুযায়ী হয়েছে কিনা, তা যাচাই করে ছবিসহ প্রতিবেদন তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে তারা জেলায় জেলায় গিয়ে প্রকৃত অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন।
সম্প্রতি খবর আসে, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ ইউনিয়নের বর্ষাপাড়া গ্রামে ওবাইদুল বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি তার বরাদ্দ পাওয়া ঘর ‘পছন্দ না হওয়ায়’ ভেঙে ফেলেছেন। আর্থিক ভাবে সচ্ছল ওবাইদুল কীভাবে ওই ঘর পেলেন, তা নিয়েও তখন এলাকাবাসীর মধ্যে প্রশ্ন আসে।
ঘর ভেঙে পড়ার পেছনের কারণ মিডিয়া অনুসন্ধান করেনি অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সব থেকে অবাক লাগে, মিডিয়ায় যারা এগুলো ধারণ করে, আবার প্রচার করে, তারা কিন্তু এটা কীভাবে হল- সেটা কিন্তু না..।
“কয়েকটা জায়গায় গেছে, যেমন এক জায়গায় ৬০০ ঘর, সেখানে হয়ত ৩/৪টা ঘর ওই যে প্রবল বৃষ্টি হল, যখন ওই জন্য মাটি ধসে কয়েকটা ঘর নষ্ট হয়েছে। আর মাত্র নয়টা জায়গায় আমরা পেয়েছিলাম যেখানে কিছুটা দুর্নীতির একটা অভিযোগ পাওয়া গেছে, মাত্র নয়টা জায়গায় তাও।”
আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে ঘর নির্মাণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাই ‘আন্তরিকতার সঙ্গে’ কাজ করেছেন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তারা মনে করেছে এটা… আমাদের যাদের অফিসারদের উপর দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছিলাম, আমাদের ইউএনও এবং ডিসিসহ সমস্ত সরকারি কর্মচারীরা ছিল, তারা করেছে।
“অনেকে নিজেরা এগিয়ে এসেছে এই ঘরগুলো করায় সহযোগিতা করার জন্য। এমনকি যারা ইট তৈরি করে, তারাও এগিয়ে এসেছে, অল্প পয়সায় তারা (ইট) দিয়ে দিয়েছে। এভাবে সবাই… সবার সহযোগিতা, এই আন্তরিকতাটাই বেশি।”
শেখ হাসিনা বলেন, “কিন্তু এর মধ্যে দুষ্টু বুদ্ধির কিছু… এটাই হচ্ছে সবচেয়ে কষ্টকর। যে যখন এটা গরিবের ঘর, সেখানে হাত দেয় কীভাবে?”
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় নেতা-কর্মীদের আরও সর্তক থাকার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যাই হোক, আমরা সেগুলো মোকাবেলা করেছি। তবে আমাদের নেতা-কর্মীদের এ ব্যাপারে আরও সতর্ক থাকা দরকার।”

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১

All Rights Reserved ©2024