
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বর্বরতায় গত প্রায় ছয় মাসে এক লাখের বেশি ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছেন। জানা গেছে, ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৩৩ হাজার ৯১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৫ হাজার ৭৫০ জন। এদিকে গাজায় গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে হামলা চালিয়ে ১৪ হাজারের বেশি শিশুকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলার পর অভিযান শুরু করে ইসরায়েল, যা এখনো চলছে। গাজায় হতাহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, যুদ্ধের কারণে গাজায় নজিরবিহীন মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। ১০ লাখের বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি। তিনি বলেন, গত ৭ অক্টোবরে পর থেকে গাজায় নিহতের সংখ্যা থামছেই না। এতে এখন পর্যন্ত এক লাখ সাত হাজারের বেশি মানুষ হতাহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, গাজায় গণহত্যার বিষয়ে সতর্ক করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল ইসরায়েলের কাছে সব ধরনের অস্ত্র বিক্রি বন্ধের দাবি জানিয়েছে। কারণ ইসরায়েলের হামলায় এরই মধ্যে গাজায় ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাস করেছে সংস্থাটি। ৪৭ সদস্যের সংস্থাটিতে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ২৮টি। বিপক্ষে ৬টি ও ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে ১৩ দেশ।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ১৪ হাজার শিশু নিহত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে হামলা চালিয়ে ১৪ হাজারের বেশি শিশুকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এটি মোট নিহতের ৪৪ শতাংশ। শুক্রবার ফিলিস্তিনের ৫ এপ্রিল বার্ষিক শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে ফিলিস্তিনিদের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
আল জাজিরা টেলিভিশনের পরিসংখ্যান অনুসারে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) নির্বিচারে হামলার কারণে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় চার শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। নিখোঁজদের মোট সংখ্যার অন্তত ৭০ ভাগ নারী এবং শিশু। তাদের সংখ্যা অন্তত ৭ হাজার।
খবরে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে ১১৭ জন শিশু নিহত এবং ৭২৪ জন আহত হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলী সেনাবাহিনীর আগ্রাসনের ফলে ফিলিস্তিনের ৮ লাখ ১৬ হাজারেরও বেশি শিশুর মানসিক নির্যাতন, ভয়ভীতি, উদ্বেগ, বিষন্নতা এবং নিপীড়নের শিকার হওয়ায় তাদের এখন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের প্রয়োজন হচ্ছে।’
পরিসংখ্যান ব্যুরো অনুমান করেছে, ২০২৪ সালের মাঝামাঝি ফিলিস্তিনে অপ্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যা ২৪ লাখ ৩২ হাজারে দাঁড়াবে। যা মোট জনসংখ্যার ৪৩ শতাংশ।
আদমশুমারি অনুসারে, গাজা উপত্যকায় প্রায় ৪৩ হাজার ৩৪৯ শিশু এতিম বা পিতামাতা ছাড়াই বসবাস করে। এই জাতীয় শিশুর সংখ্যা ২০২০ সালে ছিল ২৬ হাজার ৩৪৯।