
ঘূর্ণিঝড় আইডার প্রভাবে সৃষ্ট বন্যায় নিউইয়র্ক ও নিউজার্সিতে অন্তত ৫০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।একদিকে মহামারি করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত নিউইয়র্ক ও নিউজার্সি।অন্যদিকে হঠাৎ এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ঠ বন্যায় নাকাল কর্মজীবী মানুষ।করোনাকালীন সময়ে গত দেড় বছরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্পের ব্যবসায়ীরা।এবার আরও বড় ধাক্কা খেলেন তারা।বিশেষ করে যেসব ব্যবসায়ীদের বন্যা কবলিত অথবা দুর্যোগ পুনর্বাসন বীমা নেই তারা পড়েছেন বিপাকে।ঘূর্ণিঝড় আইডায় ক্ষতিগ্রস্থ এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হয় আওয়াজবিডির এই প্রতিবেদকের।নিউজার্সির এলিজাবেথ সিটিতে ‘অটো রিপিয়ার শপ’ বাংলাদেশি জাবির মুক্তাদিরের।মহামারি করোনাভাইরাসের ঠিক কয়েক মাস আগে তার এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু।কিন্তু করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকায় ব্যবসায় ধস নামে।মার্কিন সরকারের ঘোষিত প্রণোদনায় আবারও কিছুটা ঘুরে দাঁড়ান জাবির মুক্তাদির।কিন্তু সেই ঘুরে দাঁড়ানোর মাঝে আবারও বাধা।এবার ঘূর্ণিঝড় আইডার প্রভাবে সৃষ্ট বন্যায় এই বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর সবকিছু উলট-পালট। বন্যার পানিতে দোকানের আশেপাশের পার্কিং করা সব গাড়ি ভেসে চলে যায়।জাবির মুক্তাদির বলেন, “এমন আকস্মিক বন্যায় আমি বাকরুদ্ধ।করোনাকালীন সময় থেকে ব্যবসায় ধস।প্রায় এক বছর পর কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল।কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আইডা আবার সবকিছু কেড়ে নিল।”তিনি আরও বলেন, রিপিয়ার শপে ১৪টি গাড়ি ছিল।গ্যারাজের ভিতর ও বাহিরে পানি ঢুকে সবকিছু তছনছ হয়ে গেছে। এছাড়া গ্যারেজের ভিতরে যন্ত্রপাতি সব নষ্ট হয়ে গেছে। আমি জানি না কীভাবে আবার ঘুরে দাঁড়াব!জাবির বলেন’ “আমার সর্বমোট ক্ষতি প্রায় সাড়ে চার’শ হাজার ডলার।করোনাকালীন সময় পিপিপি লোন দিয়ে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম।কিন্তু যে ক্ষতি হয়েছে সেটা কাটিয়ে উঠতে পারব কি না সেটাই ভেবে পাচ্ছি না।”এদিকে ঘূর্ণিঝড় আইডার প্রভাবে সৃষ্ট বন্যায় নিউইয়র্ক ও নিউজার্সিতর বিভিন্ন এলাকায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের কাজ চলছে।নিউইয়র্ক সিটির আশেপাশে বড় ধরনের দুর্যোগ ঘোষণার অনুমোদন দিয়েছেন বাইডেন।ব্যবসায়ীরা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারেন।গত রবিবার নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল বলেন, ঝড়ে কমপক্ষে ৫০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।রাজ্যকে দুর্যোগ ঘোষণা অনুমোদনের জন্য কমপক্ষে ৩০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি প্রমাণ করতে হবে। নিউজার্সিতে কেমন ক্ষতি হয়েছে তা জানা যায়নি।কিন্তু রবিবার জারি করা ঘোষণাপত্রে আইডার সময় ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকা অন্তর্ভুক্ত নয়।নিউইয়র্কে ম্যানহাটন তার মধ্যে একটি। তবে কাউন্টি কিছু ফেডারেল পাবলিক সহায়তা প্রোগ্রামের জন্য যোগ্য।তবে নিউজার্সিতে- হাডসন কাউন্টি দুর্যোগ ঘোষণার বাইরে রয়েছে।
উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় আইডার প্রভাবে সৃষ্ট বন্যায় রাস্তাগুলো নদীতে পরিণত হয়েছিল এবং ঘরবাড়ি-অ্যাপার্টমেন্ট প্লাবিত হয়। এসব ঘটনায় অন্তত ৪৬ জন প্রাণ হারিয়েছে।এর মধ্যে নিউজার্সি রাজ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়।এছাড়া কর্মকর্তারা এখনও কিছু লোককে খুঁজছেন যারা বন্যায় নিখোঁজ হয়েছেন।
শাহ আহমদ