
বিএনপি-জামায়াতের সরকার পতনের একদফা কর্মসূচি হরতাল-অবরোধের কারণে সিডিউল বিপর্যয় ও নাশকতার কারণে দুর্ঘটনা রোধে কম গতিতে ট্রেন চালানোর নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) রেল ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী এক জানুয়ারি থেকে ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা রুটে নুতন একটি আন্তঃনগর ট্যুারিস্ট ট্রেন ও খুলনা-যশোর-মংলা-যশোর-খুলনা রুটে যাত্রীবাহী তিনটি ট্রেন সার্ভিস পরিচালনার ঘোষণা দেন রেলমন্ত্রী।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলা রেল সংযোগের আওতায় এলেও চলছে না কোনো ট্রেন। তাই এবার যশোর থেকে মোংলা পর্যন্ত নতুন রেলপথে চালু হচ্ছে দুই জোড়া কমিউটার ট্রেন। সেইসঙ্গে যশোর-খুলনা রুটে চলবে আলাদা এক জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন।
এ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, যশোর-মংলা রুটে শোভন কোচের ভাড়া ১২৫ টাকা, শোভন চেয়ারে ১৫০ ও প্রথম শ্রেণিতে ভাড়া ২০০ টাকা লাগবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, খুলনা-যশোর-মংলা-যশোর-খুলনা রুটে ১১৩ থেকে ১১৮ নম্বর মংলা কমিউটার ট্রেন চলবে। ট্রেনটিতে মোট কোচ থাকবে ৮টি (শোভন সাধারণ পাঁচটি, পাওয়ার কার একটি, প্রথম সিট একটি, গার্ড ব্রেক একটি)। এতে মোট আসন থাকবে ৭০০টি (শোভন সাধারণ ৬৩২টি, প্রথম শ্রেণির সিট ২৪টি ও শোভন চেয়ার-৪৪টি)। ট্রেনটি যশোর থেকে মোংলা যাওয়ার পথে যাত্রা বিরতি দেওয়া হবে- নোয়াপাড়া, দৌলতপুর, খুলনা মোহাম্মদনগর ও কাটাখালীতে।
মোংলা-যশোর রুটে দিনের প্রথম ট্রেন যশোর ছাড়বে সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে ও মোংলা পৌঁছাবে ১০টা ২৫ মিনিটে। আর ফিরতি ট্রেন মোংলা ছাড়বে ১০টা ৪৫ মিনিটে আর যশোর পৌঁছাবে দুপুর ১টা ০৫ মিনিটে। দ্বিতীয় ট্রেনটি যশোর ছাড়বে দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে আর মোংলা পৌঁছাবে বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে। আর মোংলা ছাড়বে ৪টা ৫০ মিনিটে এবং যশোর পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে। অন্যদিকে যশোর-খুলনা রুটে দিনের প্রথম ট্রেনটি খুলনা থেকে ছাড়বে ৬টায় আর যশোর পৌঁছাবে ৭টা ১০ মিনিটে। আর যশোর থেকে ৭টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে খুলনা পৌঁছাবে রাত ৯টার সময়।
১৬ কোচের ঢাকা-কক্সবাজার রুটে আন্তঃনগর ট্যুরিস্ট ট্রেনটি সমুদ্রপাড় কক্সবাজার থেকে রাত আটটায় ছেড়ে ঢাকা পৌঁছাবে সাড়ে ৪টায়। ঢাকা থেকে সোয়া ৬টায় ছেড়ে কক্সবাজার পৌঁছাবে ৩টায়। আসন থাকবে ৭৮০টি। চার ধাপে ভাড়া নির্ধারণ হয়েছে- শোভন চেয়ার ৬৯৫, স্নিগ্ধা ১৩২৫, এসি সিট ১৫৯০, এসি বার্থ ২৩৮০ টাকা।
মন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সহিংসতা চলছে। দোহাজারি-কক্সবাজার রুটে ট্রেন লাইনের ফিস প্লেট, স্লিপার খুলে নেওয়া হচ্ছে। যাত্রী নিরাপত্তা ও দুর্ঘটনা এড়াতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার দুই দিক থেকে ট্রেন ছাড়ার আগে ইঞ্জিন পাঠানোর পর যাত্রীবাহী ট্রেন ছেড়ে যায়। রাজনীতির নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের হাতিয়ার হিসেবে ট্রেনকেও আওতার বাইরে রাখা হয়নি। অথচ ট্রেন রাষ্ট্রীয় সম্পদ। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ট্রেন ও লাইনে নাশকতা করে রাজনীতির কী অর্জন হয় জানি না।
মন্ত্রী আরও বলেন, আখাউড়া-আগড়তলা রুটে আপাতত মালবাহী ট্রেন চলবে। রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে ট্রেন লাইন ঘিরে নাশকতা এড়াতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আনসার চাওয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে মন্ত্রী হিসেবে সংবাদ সম্মেলন করা নির্বাচনি আচরণ বিধি ভঙ্গ হয় না। কারণ মন্ত্রী হিসেবে রুটিন কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে।