
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় আরও ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনে ভূখণ্ডটিতে চালানো হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন তারা। নিহতদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।এছাড়া ফিলিস্তিনি এই উপত্যকায় নিখোঁজ ৮ জন চিকিৎসকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রেড ক্রিসেন্ট। সোমবার (৩১ মার্চ) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম দিনে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী শিশুসহ কমপক্ষে ৬৪ জনকে হত্যা করেছে বলে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।এদিকে দক্ষিণ গাজার রাফাহের কাছে গাড়িতে ইসরায়েলি গোলাবর্ষণের মুখে পড়ার এক সপ্তাহ পর প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস) আটজন চিকিৎসক, পাঁচজন বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মী এবং জাতিসংঘের একজন কর্মচারীর লাশ উদ্ধার করেছে।
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ (আইএফআরসি) এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, “বিধ্বংসী এই ঘটনাটি” ২০১৭ সালের পর থেকে বিশ্বের যে কোনও জায়গায় তাদের কর্মীদের ওপর সবচেয়ে মারাত্মক আক্রমণের ঘটনা।গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ৫০ হাজার ২৭৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৫ জন আহত হয়েছেন।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস প্রায় দুই মাস আগে তাদের মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি আপডেট করে বলেছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হওয়া হাজার হাজার মানুষ ইতোমধ্যেই মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় আজ পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম দিন পালন করা হচ্ছে। এই দিনে ঐতিহ্যগতভাবে ফিলিস্তিনিরা আনন্দ উদযাপন করে থাকলেও এ বছর একেবারে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। গাজায় বোমা বিস্ফোরণ, কামানের গোলার শব্দের মাঝে ফিলিস্তিনিদের বেঁচে থাকার আর্তনাদ বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
গাজার মধ্যাঞ্চলের আল-মাওয়াসি এলাকায় রোববর সকালের দিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিমান থেকে গুলি চালানো হয়েছে।এদিকে, গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের ঈদ উদযাপন যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী এই উপত্যকায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত করায় সেখানকার মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁইও মিলছে না।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘যে শিশুরা এই দিনে নতুন পোশাক পরত তারা এখন ক্ষুধার্ত এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। গাজার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নেই, উৎসবের কোনও খাবারও নেই। আজ ভোরের পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সেখানকার বসতিগুলো ধ্বংস করে চলেছে।’’