বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিঙ্গসমতা নিশ্চিত করতে নারী নেতাদের একটি নেটওয়ার্ক গঠনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির আহ্বানে নারী নেতাদের নিয়ে ২১ সেপ্টেম্বর একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করতে নারী নেতাদের একটি নেটওয়ার্ক গঠন করার প্রয়োজন। যা লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করতে চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে।

তিনি বলেন, দৃঢ়ভাবে অনুভব করছি- নারী নেতাদের একটি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যা শুধু একক বৈঠকের জন্য একত্রিত করবে না, বরং লিঙ্গ সমতা অর্জনে বাস্তব পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে একটি শক্তি হিসেবে কাজ করবে এবং নারী ক্ষমতায়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করতে বিশ্ব নেতাদের সামনে তিনটি প্রস্তাব পেশ করেন।

প্রথম প্রস্তাবে তিনি বলেন, লিঙ্গ সমতার বিষয়ে উপদেষ্টা বোর্ড প্রতিষ্ঠার জন্য প্রশংসা করছি। এখন এটিকে স্থানীয়করণ করা দরকার। প্রত্যেক পর্যায়ে, বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ে লিঙ্গ চ্যাম্পিয়ন প্রয়োজন এবং এর মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারি।

দ্বিতীয়ত প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, নারী নেতৃত্বাধীন সংগঠনগুলোকে পর্যাপ্ত রাজনৈতিক ও আর্থিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করা প্রয়োজন। এ ধরনের প্রচেষ্টায় সহায়তার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

তৃতীয় প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, লিঙ্গ সমতার জন্য সাধারণ কর্মসূচিকে জোরদার করতে নেতাদের একটি সম্মেলন করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। এতে সব নেতাদের যোগদান করা উচিত এবং লিঙ্গ সমতার অগ্রগতির জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন।

নারীদের ওপর করোনা মহামারির নেতিবাচক প্রভাবের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বেড়েছে। ইউনিসেফ এ দশকের শেষের আগে আরও দশ মিলিয়ন বাল্যবিবাহের আশঙ্কা করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রায় ৭০ শতাংশ নারী। তাঁরা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনের সারিতে রয়েছেন। তৈরি পোশাককর্মীদের ৮০ শতাংশের বেশি নারী। অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতিতে নারীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। মহামারিকালে তাঁদের অনেকে চাকরি ও আয় হারিয়েছেন। নারীসহ ২০ লাখ প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছেন। দেশের কষ্টার্জিত অগ্রগতির চাকা পেছনে ঘোরার ঝুঁকিতে রয়েছে।

বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বে সপ্তম অবস্থানে আছে। বর্ধিতসংখ্যক নারী কর্মী বাহিনীতে যোগ দিচ্ছেন।