শুক্রবার, ৯ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নাসিরনগরে ধর্ষণ মামলার আসামি ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ৫ শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাতদিন কারাভোগের পর জামিনে এসেও পুলিশ আতঙ্কে ভুগছে শিশু সাকিবুল।
সাকিবুল সদর ইউনিয়নের টেকানগর গ্রামের উসমান মিয়ার ছেলে। ভয়ে তার সহপাঠী এবং অন্য শিশুরাও এখন স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। ঘটনাটি উপজেলা সদরের টেকানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়, গত ৪ঠা জুলাই নাসিরনগর থানায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে ভুক্তভোগী এক শিশুর পিতা মো. জালাল উদ্দিনকে বাদী করে নাসিরনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে নাসিরনগর থানা পুলিশ। এ বিষয়ে জালাল উদ্দিন বলেন, আমাকে ডেকে এনে থানার এসআই এনামুল হক বলেছে, ‘তুমি মামলার বাদী হইবা’। পরে আমারে বসিয়ে মামলা লেখে আমার সই নিয়েছে। মামলার আসামি সাকিবুল মিয়া জানান, আমি সকাল ৭টার সময় আমার সহপাঠীর সঙ্গে প্রাইভেট পড়তে নাসিরনগর যাই। সকালের প্রাইভেট শেষে স্কুলে যাই ১০টায়।

বিজ্ঞাপন

তখন আমাদের পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শেষে বিকাল ৪টার দিকে অন্য আরেকটা প্রাইভেটে যাই। সেখান থেকে আমার বাবা আমাকে থানায় নিয়ে আসে। আমি কিছুই জানি না। অথচ থানায় নেয়ার পর পুলিশ আমাকে জেলে দিয়ে দিলো। আমি অসুস্থ, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। জেলে থাকতে আমার অনেক কষ্ট হয়েছে। নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি। আমার গ্রামের স্কুলের ম্যাডামরা আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। এখন আর স্কুলে যেতে ইচ্ছে করে না। পুলিশ দেখলে ভয় লাগে আবার যদি ধরে নিয়ে যায়। মামলার সাক্ষী ও টেকানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রওশন আরা বলেন, ঘটনার দিন সকাল ৯টার সময় স্কুলে ঢুকে ৫ জন মেয়ে বাচ্চাকে শ্রেণিকক্ষের  ভেতরে দেখতে পায় সহকারী শিক্ষক সালমা আক্তার। এদের কয়েকজনের পড়নে পোশাক ছিল না। কিন্তু কোনো ছেলেকে আমরা আশপাশে দেখিনি। সাকিব আমার সাবেক ছাত্র। সে অনেক ভালো ছেলে। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ৪ঠা জুলাই সকাল সাড়ে ৮টার সময় জাম্বুরার প্রলোভন  দেখিয়ে শিশুদের স্কুলে নিয়ে যায় সাকিব। অথচ প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি সেদিন প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে ৪৫ মিনিটের দূরত্বে সকাল ৭টার সময় সহপাঠীর সঙ্গে সাকিব নাসিরনগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ বিষয়ে নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. রওশন সিদ্দিক  জানান, সাকিব আমার ছাত্র। গত ৪ জুলাই সকাল আটটায় আমার কাছে গণিত প্রাইভেট পড়তে আসে সাকিব। তার বাড়ি থেকে আমার এখানে আসতে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় লাগে। টেকানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর মা ফাহিমা বেগম বলেন, আমার ছেলে স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। বলে স্কুলে গেলে যদি পুলিশে ধরে নিয়ে যায়। নাসিরনগর থানার ওসি সোহাগ রানা বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাকিবকে আটক করা হয়েছিল। মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। পুলিশ আতঙ্কের বিষয়টি সত্য নয়।

 

 

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
৩১