
নিজস্ব ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে হাজারো প্রবাসী বাংলাদেশির বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস আর উন্মাদনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো নর্থ আমেরিকান বাংলাদেশি ফেস্টিভ্যাল ২০২৩।
বাঙালির জনস্রোতে তিনদিন ব্যাপী নর্থ আমেরিকান বাংলাদেশি ফেস্টিভ্যালে মিশিগানের ডেট্রয়েট জ্যাইন ফিল্ড পরিণত হয়েছিল এক খণ্ড বাংলাদেশে।
বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনের তুমুল জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা জেমস যখন মঞ্চে উঠলেন, সবাই তখন গুরু, গুরু বলে চিৎকার করে পুরো মাঠ প্রকম্পিত করে তোলে। কানায় কানায় পরিপূর্ণ মাঠে, জেমসের গানের সুরের যাদুতে মেতে উঠল মিশিগানের দর্শকরা। গুরুকে সামনাসামনি এক নজর দেখতে আর সুর-মূর্ছনায় আচ্ছন্ন হতে শামিল হন তার ভক্তরা। গত শুক্রবারে শুরু হওয়া মিশিগানে বসবাসরত প্রবাসীদের প্রাণের মেলা রবিবার (২৮ আগস্ট) মধ্যরাতে নগর বাউল জেমসের সুরের মূর্ছনায় সমাপ্তি ঘটে।
‘কবিতা তুমি স্বপ্নচারিণী’ গানটি দিয়ে জেমস তার কনর্সাট শুরু করেন। এরপর একে একে তার জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে – দিওয়ানা মাস্তানা, গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া, ‘মা’, কানামাছি ভোঁ ভোঁ, দুষ্ট ছেলের দল,আসবার কালে আসলাম একা, তারায় তারায়, পাগলা হাওয়া ও ভিগি ভিগি -পরিবেশন করতে থাকেন।
মেলায় আগত দর্শকরা হাত তালি দিয়ে, বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দ-উচ্ছ্বাসে, মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে, নেচে গেয়ে অনেকদিন পর স্মরণকালের সেরা কনসার্ট উপভোগ করেছেন। মঞ্চে জনপ্রিয় এই শিল্পীর একের পর এক পরিবেশনায় হাজার হাজার প্রবাসী সীমাহীন উচ্ছ্বাস আর উল্লাসে ফেটে পড়েন। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ আমেরিকান বাংলাদেশি ফেস্টিভ্যাল ২০২৩ আয়োজিত জেমসের লাইভ কনসার্ট যেন ঐতিহাসিক।
অনেককেই বলতে শুনা গেছে নর্থ আমেরিকান বাংলাদেশি ফেস্টিভ্যালের আয়োজকরা যাদুর খেলা দেখালেন, এতো বিশাল ক্রাউড প্রবাসে এর আগে বাংলাদেশী কোনো মেলায় হয়নি। কেউ কেউ বলেছেন – মিশিগানের তরুন প্রজন্মর এই ধরনের কনসার্টের ক্ষুধা ছিলো অনেকদিনের, আজ নর্থ আমেরিকান বাংলাদেশি ফেস্টিভ্যালে সেই ক্ষুধা মিটলো, বার বার মনে হচ্ছিলো বাংলাদেশেই আছি। কেউবা আবার বলেছেন, বাংলাদেশে মনে হয় এমন একজনই শিল্পী আছেন যিনি ছোট থেকে বড়, সকলশ্রেণীর দর্শকদের উন্মাদনায় ভাসাতে পারেন। নগর বাউল ১৫ বছর বয়সী থেকে ৬০ বছর বয়সী সবাইকে মাতিয়ে, নাচিয়ে গেলেন, তিনিই তো অনন্য -জেমস। এটি বিদেশের মাটিতে আমার দেখা সেরা কনসার্ট।
এর আগে জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী রিজিয়া পারভিনের গানে মুগ্ধ হন উপস্থিত দর্শক-শ্রোতারা। মেলায় সৈয়দ শাফী আহমেদ, পৃথা দেব, হিমেল হোসেনসহ স্থানীয় শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।
বাঙালীদের প্রাণের এই উৎসবে স্বপরিবারের উপস্থিত হয়ে মেলাকে আনন্দময় ও স্বার্থক করে তোলায় সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মেলার প্রধান আয়োজক আকীকুল হক শামীম,
মেলার অন্যতম আয়োজক খালেদ হোসেন, সৈয়দ রায়হান,
বিপ্লব হোসেন, আরিফ আরমান জিসান,মোশারফ আহমেদ, ফারজানা চৌধুরী পাপড়ি, নাইম চৌধুরী, হেলাল মিয়া, সায়েফ খান,
লিয়াকত আলী এবং মেলার গ্রান্ড স্পোন্সর এসএনএস হোম লোন এর পরিচালক নাসির সবুজ।
আয়োজকরা বলেন, বাংলা, বাঙ্গালি সংস্কৃতি, কৃষ্টি,ঐতিহ্য, নতুন প্রজন্মকে জানানো ও তাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য এ মেলা।
মেলায় ছিল রকমারি দোকানপাট। সেসব দোকানে ছিল বাংলাদেশী পণ্যের বাহার। শাড়ী, গহনা, খেলনা, ঘর সাজানোর জিনিস, খাবারের দোকান।
তিন দিনব্যাপী মেলার উপস্থাপনায় ছিলেন রিচি সোলায়মান এবং শারমিন সিরাজ সোনিয়া। আয়োজকরা আরো বলেন,
আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে দর্শকরা এসেছিলেন মেলার সাথে জেমসের গান উপভোগ করার জন্য। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতায় এই ধরনের আয়োজন সম্ভব হয়েছে।
এছাড়া র্যাফেল ড্রতে ১ম পুরস্কার ছিল বেঙ্গল অটো সেলস এলএলসির সৌজন্যে একটি গাড়ি, কন্যান্ট ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল এর সৌজন্য ২য় পুরস্কার ছিল ডেট্রয়েট টু ঢাকা প্লেন টিকেট এবং আকর্ষণীয় সব পুরস্কার।