রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের চারজনসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বেলপুকুর এলাকায় টিসিবির পণ্যবাহী একটি ট্রাক যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে চাপা দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। অটোরিকশায় একজন ক্যানসার আক্রান্ত রোগী ছিলেন। তাকে হাসপাতালে আনছিলেন স্বজনরা।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার কান্তপুর গ্রামের ইনসাব আলী (৭৫), তার ছেলে আইয়ুব আলী লাবু (৪২) ও মেয়ে পারভিন বেগম (৩৫) এবং ইনসাব আলীর নাতনি রাজশাহীর শাহ মখদুম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী শারমিন (১৭)। নিহত অপরজন একই উপজেলার মকামপুর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে সিএনজিচালিত অটোরিকশারচালক মোখলেসুর রহমান।
নিহতের স্বজনরা জানান, ইনসাব আলী ক্যানসার আক্রান্ত। তাকে কেমোথেরাপির জন্য রাজশাহীতে নিয়ে আসা হচ্ছিল।
দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকার কাটাখালী সিটি গেট এলাকার রিপনের ছেলে হৃদয়কে (১৮) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। পরে জরুরি বিভাগ থেকে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। আহত হৃদয় ট্রাকের সহকারী বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, টিসিবির পণ্যবাহী একটি ট্রাক রাজশাহী শহর থেকে পাবনার দিকে যাচ্ছিল। বিপরীত দিক নাটোর থেকে যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশাটিও রাজশাহীর দিকে আসছিল। ট্রাকটি পুঠিয়ার বেলপুকুর এলাকায় পৌঁছালে যাত্রীবাহী ওই সিএনজিকে চাপা দেয়। এতে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সিএনজিসহ পাশের একটি দোকানের ভেতর ঢুকে যায়। দুর্ঘটনায় সিএনজিটিও দুমড়ে-মুচড়ে একেবারে চুরমার হয়ে যায়। সিএনজি অটোরিকশার পাঁচজন যাত্রীই ট্রাক ও অটোরিকশার নিচে চাপা পড়েন। এতে ঘটনাস্থলে এক যাত্রী মারা যান। আর গুরুতর আহত পাঁচজনকে উদ্ধার করে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাদের মধ্যে চারজনকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এম এ জলিল জানান, হাসপাতালে যে পাঁচজনকে আনা হয় তাদের মধ্যে দুই নারীসহ চারজন মারা গেছেন। আহত অন্য একজনের অবস্থাও সংকটাপন্ন। তাকে হাসপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
জানতে চাইলে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) জামিরুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়েই বেলপুকুর থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুর্ঘটনায় পাঁচজন মারা গেছে। তাদের চারজনই একই পরিবারের আত্মীয়স্বজন। একই পরিবারের ওই চারজন চিকিৎসার উদ্দেশ্যে রাজশাহী আসছিলেন। দুর্ঘটনার পর ট্রাকচালক পালিয়ে যান। তবে চালকের সহকারী হৃদয় আহত হয়ে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘাতক ট্রাকচালককে আটকের চেষ্টা চলছে।