
রোজার আগেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বেড়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবারের মতো প্রবাসী আয় আড়াই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। গত মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা ২ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন বা ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি।
এর আগে ফেব্রুয়ারিতে কখনও এতো বেশি রেমিট্যান্স আসেনি। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এসেছিল ২ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার। মূলত ফেব্রুয়ারি মাসে দিন সংখ্যা কম হওয়ায় রেমিট্যান্স কম থাকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকের মাধ্যমে ডলারের ভালো দর পাওয়া ও হুন্ড বন্ধ হওয়া এবং রোজাসহ বিভিন্ন কারণে ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স বাড়ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলেন, প্রতিবছরই রমজান মাসে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স তথা প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। এবারে অবশ্য রমজান শুরু হওয়ার আগেই প্রবাসী আয় চাঙা হয়ে উঠেছে। পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চলতি মার্চ মাসে প্রবাসী আয় ফেব্রুয়ারি তুলনায় বাড়বে বলে আশা করছেন ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান আমার দেশকে বলেন, রেমিট্যান্স বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ব্যাংকিং চ্যানেলের ডলার দর খোলা বাজারের সঙ্গে পার্থক্য কমিয়ে এনেছে। আবার সরকার পতনে হুন্ডি বন্ধ হয়েছে। প্রবাসীরা এখন বৈধ পথেই রেমিট্যান্স পাঠাতে বেশি উৎসাহী। এছাড়া ব্যাংকগুলোর এলসি খোলার জন্য নিজেদের সক্ষমতা অর্জন করতে বলা হয়েছে। তাই তারা রেমিট্যান্স সংগ্রহে জোড় দিয়েছে। এসব কারণে প্রবাসী আয় বেড়েছে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে দেশে ১ হাজার ৮৪৯ কোটি মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ৪৯৩ কোটি মার্কিন ডলার। ফলে অর্থবছরের ৮ মাস হিসাবে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৩৫৬কোটি ডলার বা ২৩ দশমিক ৮ শতাংশ।
গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রতি মাসেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছে। প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি এমন সময়ে এল, যখন দেশের বাজারে ডলার সরবরাহে ঘাটতি চলছে। বৈদেশিক মুদ্রার এই ঘাটতি মোকাবিলায় প্রবাসী আয় বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন।