শনিবার, ১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

অভিনয়ের প্রস্তাবের বিষয়টি বিশ্বাসই হচ্ছিল না দোয়েলের

অভিনেত্রী ও মডেল দিলরুবা দোয়েলের জীবনযাপন বিনোদন জগতের আর দশজনের মতো নয়। জীবনে নানা বাধার সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। সব বাধা পেরিয়ে এখন ছুটে চলেছেন নিজের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে। চাকরির পাশাপাশি সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছেন মডেলিং ও অভিনয়। ফটোসুট দিয়ে তাঁর ক্যারিয়ার শুরু। জীবনে দ্বিতীয় অধ্যায়ে তিনি পা রাখেন নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চুর সিনেমা ‘আলফা’ দিয়ে। এ সিনেমায় অভিনয়ের যখন প্রস্তাব পান তখন বিশ্বাসই হয়নি দোয়েলের। সিনেমায় দুর্দান্ত অভিনয় করে নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি। পেলেন নতুন জীবন। এটিই ছিল তাঁর ক্যারিয়ারের বাঁক বদলের সিনেমা। এরপর থেমে থাকেনি তাঁর যাত্রা।

পরর্তী সময়ে এন রাশেদ চৌধুরীর ‘চন্দ্রাবতী কথা’, নুরুল আলম আতিকের ‘লাল মোরগের ঝুটি’, বন্ধন বিশ্বাসের ‘লাল শাড়ি’, আহমেদ হুমায়ুনের ‘পটু’সহ আরও কয়েকটি চলচ্চিত্রে দর্শক দেখেছেন তাঁর অভিনয়ের ঝলক। আবারও পর্দায় ফিরছেন তিনি। ১২ জুলাই মুক্তি পেতে যাচ্ছে তাঁর নতুন সিনেমা ‘আজব কারখানা’। এটি তাঁর ক্যারিয়ারের ১০ নম্বর সিনেমা। শবনম ফেরদৌসীর পরিচালনায় এই সিনেমায় রাজীব নামে এক রকস্টারের জীবনকে তুলে আনা হয়েছে। যিনি গ্রামবাংলার বাউলশিল্পীদের সংস্পর্শে এসে নিজের জীবনের নতুন অর্থ খুঁজতে শুরু করেন। এতে আবহমান বাংলার বিভিন্ন গানের ধারা, ঘরানা ও মর্মবাণী তুলে ধরা হয়েছে। সেই সঙ্গে আছে রক ও ফিউশন গান।

সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে দোয়েল বলেন, ‘আমার বাড়ির এলাকা রংপুরে নির্মাতা শবনম ফেরদৌসী আপুর একটি সিনেমার দৃশ্য ধারণ হয়েছিল। সেখানেই পরিচয়। এ কারণে আপুকে আমি আগে থেকেই চিনতাম। একদিন আপু আমাকে তাঁর সিনেমায় কাজের প্রস্তাব দেন। তিনি অভিনয়শিল্পী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে খুব চুজি। সিনেমায় চরিত্রের জন্য একটি মেয়ের জীবনের স্ট্রাগল দরকার। এ ধরনের চরিত্র তিনি নাকি আমার মধ্যে খুঁজে পেয়েছেন। নির্মাতা তাঁর বাস্তব জীবনের অনেক কিছু সিনেমায় ইনপুট করেছেন। সবকিছু মিলিয়ে শুটিংয়ে একটু চাপ অনুভব করেছি।’

সিনেমায় একজন সাংবাদিকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন দোয়েল। তাঁর বেড়ে উঠার পরিক্রমায় অনেক সাংবাদিকের সাহচর্য পেয়েছেন তিনি। বড় বোন দিলশাদ হোসেন দোদুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। বোনের কাছে ক্যাম্পাসে অনেক গিয়েছেন। তখন অনেক সাংবাদিকের সঙ্গে মেশার সুযোগ হয়েছে তাঁর। সবকিছু মিলিয়ে চরিত্রটি আত্মস্থ করতে সহজ হয়েছে বলে জানান দোয়েল।

সিনোময় কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে দোয়েল আরও বলেন, ‘আজব কারখনা’ আমার ক্যারিয়ারের ব্যান্ড্রিং কাজ। চার বছর আগে সিনেমার শুটিং শুরু করেছিলাম। শুটিং শেষ করার পরই দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এখন যখনই কোনো সিনেমার কাজে যাই তখনই এ সিনেমাটির ব্যাপারে সবাই জানতে চান। কারণ এ সিনেমায় কাজ করেছেন কলকাতার তারকা অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। এত বড় একজন তারকার সঙ্গে এর আগে কাজ করার সুযোগ হয়নি। সহযোগিতাপরায়ণ একজন শিল্পী তিনি। টিমটাও ছিল বেশ মজার। নারী নির্মাতা, নারী প্রযোজক। বেশ ফুর্তি নিয়ে নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় কাজ শেষ করেছিলাম।

এদিকে অভিনেত্রী জানান, সম্প্রতি নাম না ঠিক হওয়া একটি সিনেমার শুটিং শেষ করেছেন তিনি। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাচ্ছেন না। নতুন আরও একাধিক সিনেমায় কাজের কথা চলছে বলে জানান দোয়েল।  বড় পর্দার বাইরে বর্তমানে দীপ্ত টিভিতে প্রচার চলছে তাঁর অভিনীত ধারাবাহিক ‘মাশরাফি জুনিয়র’। নাটকে নারী ক্রিকেটের একজন কোচের চরিত্রে অভিনয় করছেন দোয়েল। পাশাপাশি দুরন্ত টিভিতে প্রচার হচ্ছে তাঁর অভিনীত ধারাবাহিক ‘এলিয়েন’। এ ছাড়া ওয়েব মাধ্যমেও কাজ করছেন তিনি। বলা যায়, ক্যারিয়ারের সুসময় পার করছেন এই অভিনেত্রী।

বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরির পাশপাশি ফাঁকে ফাঁকে চলে সিঙ্গেল মাদার দোয়েলের অভিনয়। এ ছাড়াও মডেলিং, ফটোসুটসহ নানা কাজের ভেতর ব্যস্ত সময় কাটে তাঁর। একমাত্র সন্তানকে ঘিরেই তাঁর সুখের পৃথিবী। তাঁর সঙ্গে নানা খুনসুটি ঝাগড়াঝাটি-ভালোবাসায় কাটছে মধুর সময়। ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ দিয়েই শেষ করার কথা বললাম তাঁকে। আবার বিয়ে করবেন কিনা, এমন প্রশ্ন শুনেই বললেন, ‘আবার বিয়ে! যে অভিজ্ঞতা হয়েছে… আমি এখন কেবল প্রতিদিন আরও শক্তিশালী হয়ে আগামীর পথ চলতে চাই। এখন আমি নিজের গল্প নিজেই সাজাব। যে গল্পে ভয় নেই। পরাজয় নেই। এখনওতো জীবনটাই পরিবর্তন হয়ে গেছে। জীবনে শ্রেষ্ঠ সময়টা কাটাচ্ছি– এটিই পরম পাওয়া।’

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
৩১