বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কোম্পানীগঞ্জে শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই

সোহেল রানাঃ সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৬৫ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে যেতে হয় অন্য প্রতিষ্ঠান কিংবা অস্থায়ী শহীদ মিনারে। উপজেলার তেমনি একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢালারপাড় উচ্চ বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণের ৩২ বছর পার হলেও সেখানে নেই কোনো শহীদ মিনার।

কলাগাছ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে তাতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে দেখা যায়। এরকম অসংখ্য বিদ্যালয় রয়েছে যাদের শহীদ মিনার নেই।

এদিকে, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণে নেই কোনো উদ্যোগ।  শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক কিংবা মাধ্যমিকে গিয়েও পাচ্ছে না শহীদ মিনার। বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে পুস্পার্পণের কোনো সুযোগ পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। এতে শহীদ দিবস ও মাতৃভাষা দিবসের বিশেষত্ব জানতে পারছে না তারা।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা  জহিরুল হক বলেন, উপজেলায় ৭৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৭টি প্রি-ক্যাডেট এবং ১টি কমিউনিটি ও ৫ টি রেজিস্ট্রার  প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সর্বমোট ৯৬টি প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার রয়েছে। অন্য ৮০ টি বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই।

তিনি বলেন, প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রতি বছর ২টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্যে শহীদ মিনার তৈরি করে দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। প্রতি বছর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ২টি করে মোট ১২টি বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হবে। পর্যায়ক্রমে প্রতিটি বিদ্যালয়েই শহিদ মিনার নির্মাণ করা হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বদিউজ্জামান বলেন, উপজেলায় ২১ টি মাধ্যমিক ও ৫টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৪ টি মাদ্রাসা এবং ২টি কলেজ রয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অধিনে সর্বমোট ৩২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১১টি প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনার আছে।

উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসসূত্রে জানা যায় ১২৮ টি সর্বমোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ১০১টি বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার নেই এবং ২৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনার রয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বদিউজ্জামান প্রতিবেদককে বলেন, সকল প্রতিষ্ঠান প্রধানকে বলে দিয়েছি শহীদ মিনার নির্মাণ করতে। টাকার যোগান কিভাবে হবে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, টাকার যোগান প্রতিষ্ঠানের গভর্ণিং বডি ব্যবস্থা করবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং বলেন, যে সব প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনার স্থাপনের সামর্থ নেই তাদের জন্যে এলজিএসপি ও এডিবি খাত থেকে বরাদ্দ দেই। এভাবে পর্যায়ক্রমে সব বিদ্যালয়েই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। খুব শিগগিরই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে আলোচনা করে শহিদ মিনার বিহীন বিদ্যালয়ের তালিকা করা হবে এবং শহীদ মিনার নির্মাণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সত্যজিত রায় দাশ বলেন, শহীদ মিনার মুলত বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকেই নির্মাণের প্রাথমিক উদ্যোগটি নেয়। আর অর্থের বরাদ্দটা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাদের পরিষদ থেকেই ব্যবস্থা করে দেন। তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলবো তারা যেন এই বিষয়টা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে বসেন।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  

All Rights Reserved ©2024