বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

খালেদা জিয়ার কোনো ক্ষতি হলে দায় সরকারের: ফখরুল

শিব্বির আহমদঃ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কোনো ক্ষতি হলে দায় সরকারকেই নিতে হবে। তাঁর কিছু হলে আওয়ামী লীগকে রেহাই দেবে না জনগণ। বেগম জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশে এ কথা বলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, আইনের কারণে খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে যেতে দিতে পারছে না বলে সরকার যে যুক্তি দেখাচ্ছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। সংবিধানের ধারায়ই বলা আছে, সরকার চাইলে চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে পাঠাতে পারে। আপনারা কেন মিথ্যা কথা বলেন? এখানে অনেক আইনজীবী আছেন, তাঁরা বলছেন ৪০১ ধারাতেই বলা আছে, একমাত্র সরকারই পারে তাঁকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠাতে। এখন দায়দায়িত্ব সম্পূর্ণ আওয়ামী লীগ সরকারের, শেখ হাসিনা সরকারের। খালেদা জিয়ার যদি সুচিকিৎসা না হয়, যদি তাঁর ক্ষতি হয় এ দেশের মানুষ কোনো দিন আপনাদের রেহাই দেবে না। দায় সব আপনাদের বহন করতে হবে।’ বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকালও (সোমবার) তাঁর রক্তক্ষরণ হয়েছিল। বেগম জিয়া মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। গতকাল (সোমবার) রাত ১২টায় ডা. জাহিদ (এ জেড এম জাহিদ হোসেন) আমাকে টেলিফোন করলেন, আপনি এখনই চলে আসুন হাসপাতালে। আমি গিয়ে দেখি প্রায় ১০ জন চিকিৎসক তাঁর চিকিৎসা করছেন। প্রত্যেকে উদ্বিগ্ন-চিন্তিত। ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম কী হয়েছে? তাঁরা বললেন, আমরা যেটা ভয় পাচ্ছিলাম—যেকোনো সময় আবার রক্তক্ষরণ হতে পারে, আবার রক্তক্ষরণ হয়েছে।’

তিনি বলেন, সকালে আমি আবার ডা. জাহিদকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ম্যাডাম এখন আগের চেয়ে অনেকটা ভালো। তবে তাঁরা পরিষ্কার করে বলেছেন, তাঁর যে অসুখ সেটির চিকিৎসা এখন আর এখানে নেই। অবশ্যই বিদেশে উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠাতে হবে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসকদের সম্পর্কে এক মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘একজন মন্ত্রী বলেছেন, ডাক্তারদের বিএনপি যা বলতে বলেছে তাঁরা তাই বলছেন।ধিক্কার দিই। এভাবে বিদ্রূপ করে কথা বলেন। বাংলাদেশে এমন কোনো মানুষ নেই, যারা চায় না খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা হোক।’

দেশে গণতন্ত্র নেই দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গণতন্ত্র সম্মেলন হচ্ছে সেখানে বাংলাদেশের নাম নেই। কেন? বাংলাদেশ এখন আর গণতন্ত্রের দেশ নেই। শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশ কর্তৃত্ববাদ, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তিনি আগামী দু-এক দিনের মধ্যে বিএনপির নতুন কর্মসূচি আসছে বলে জানান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘পুলিশ ব্যারাকে রেখে রাস্তায় আসেন। আওয়ামী লীগ বনাম বিএনপি খেলা হবে। কে হারে কে জেতে দেখে নেব।’

ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে উত্তরের সদস্যসচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের রফিকুল ইসলাম মজনুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, শাহিদা রফিক, তৈমূর আলম খন্দকার, তাবিথ আউয়ালসহ অঙ্গসংগঠনের মধ্যে যুবদলের সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, শ্রমিকদলের আনোয়ার হোসেইন, সালাহউদ্দিন সরকার, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সমাবেশের শুরুতে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের আহ্বায়ক শাহ নেসারুল হক বিএনপি নেত্রীর আশু সুস্থতা কামনায় মোনাজাত পরিচালনা করেন। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। কাকরাইলের নাইটিংগেল রেস্তোরাঁ থেকে ফকিরেরপুল সড়কের দুই পাশে নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে, রাস্তায় বসে বক্তব্য শোনেন। চারটি ছোট ট্রাকের ওপর মঞ্চ তৈরি করা হয়। রাজধানী ছাড়াও আটটি বিভাগীয় শহরেও একযোগে সমাবেশ করা হয়েছে।

 

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  

All Rights Reserved ©2024