শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আফগানিস্তানে নারী সাংবাদিক ৩৯ জন

তালিবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার শুরু থেকে নারী স্বাধীনতাই সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কায় ছিলো যা সত্যিকারের রূপ নিতে শুরু করেছে।২০২০ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে নারী সাংবাদিকের সংখ্যা ছিল ৭০০।সেই সংখ্যা কমতে কমতে বর্তমানে এসে ঠেকেছে ৩৯-এ।সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স স্যানস ফ্রন্টিয়ার্স (আরএসএফ) বা রিপোর্টার উইদাউট বর্ডার্স আজ বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে আফগানিস্তানে সক্রিয় ছিল ১০৮ টি সংবাদমাধ্যম।এই সংবাদমাধ্যমগুলোতে চাকরি করতেন মোট ৪ হাজার ৯৪০ জন।এই কর্মীদের মধ্যে নারীদের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮০ জন এবং তাদের মধ্যে সাংবাদিক ছিলেন ৭০০ জন।কিন্তু ১৫ আগস্ট তালিবান বাহিনী কাবুলের দখল নেওয়ার পর থেকে ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলোতে নারী সাংবাদিকদের উপস্থিতি।বর্তমানে পুরো আফগানিস্তানে মাত্র ৩৯ জন নারী সাংবাদিক কর্মক্ষেত্রে কাজ করছেন বলে জানিয়েছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স।তালিবান কাবুল দখলের আগে ও পরে নারী সাংবাদিকদের ঘরে থাকতে বাধ্য করা, হয়রানি এমনকি মারধোর পর্যন্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।কাবুলের দখল নেওয়ার পর তালিবান বাহিনী যদিও বলেছে, নারীদের কাজকর্মে যোগদানে কোনো বাধা দেওয়া হবে না, কিন্তু অধিকাংশ নারী সাংবাদিক সেই প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখতে পারছেন না বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে আরএসএফ।নারী সাংবাদিকরা যেন শঙ্কামুক্তভাবে তাদের কাজ চালিয়ে যেতে পারেন, সেজন্য তালিবান কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আরএসএফের মহাপরিচালক ক্রিস্টোফার ডেলোাইরে বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের নিজ পেশায় ফেরা তাদের মৌলিক অধিকার এবং তারা যেন সেই পেশায় ফিরতে কোনো প্রকার আতঙ্ক বোধ না করেন, আফগানিস্তানে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করা একান্ত প্রয়োজন।’এদিকে নিরাপত্তার অজুহাত দিয়ে কর্মজীবী নারীদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেয় তালিবান।জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, “আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর অনেকেরই প্রশিক্ষণ নেই যে কিভাবে নারীদের সাথে আচরণ করতে হয় বা তাদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়।পূর্ণ নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা নারীদের ঘরে থাকার নির্দেশ দিচ্ছি।” অন্যদিকে নারীদের অধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশলেট বলেন যে, তিনি তালিবানদের দ্বারা শিশু সৈনিক নিয়োগ এবং মৃত্যুদণ্ড দেয়ার কথা জানতে পেরেছেন।তিনি জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় বক্তব্য রাখছিলেন। পরে, কাউন্সিল নারী ও মেয়েদের অধিকারের প্রতি তার “অটল অঙ্গীকার” নিশ্চিত করে একটি প্রস্তাব অনুমোদন করে।কিন্তু অনেক মানবাধিকার গোষ্ঠী আফগানিস্তানে জাতিসংঘের বিশেষ তদন্ত প্রতিনিধি পাঠানোর যে আহ্বান জানিয়েছিল তা শেষমেশ অনুমোদন পায়নি।ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে, তালিবান বেশ সংযত আচরণ করছে এবং তারা নারী ও মেয়েদের অধিকার এবং বাক-স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।তবে তালিবানদের দেয়া প্রতিশ্রুতি ও কাজে মিল না থাকায় উদ্বেগে দিন কাটছে আফগানিস্তানিদের।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  

All Rights Reserved ©2024