বুধবার, ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

করোনা পরবর্তী মিশিগানের হালচাল

লেখক- কামাল মোঃ মোস্তফাঃ করোনা পরবর্তী বিশ্বে জীবন যাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এনিয়ে এখন ব্যাপক গবেষণা চলছে। তার ধারাবাহিকতায় মিশিগানে বাংলাদেশি জনসমাজে অনেক পরিবর্তন লক্ষণীয়।

গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করলে করোনা পূর্ব ও করোনা উত্তর জীবন যাত্রার পার্থক্য সহজেই অনুধাবন করতে পারবেন। আমাদের প্রত্যেকের যাপিত জীবনের কর্মকাণ্ডে করোনার প্রভাব এখনো চলমান। বিবেকবান মানুষ মাত্রই এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল। সামাজিক , রাজনৈতিক , শিক্ষা , ধর্মীয় মনস্তাত্ত্বিক ও কর্মজীবন সহ দৈনন্দিন জীবনে করোনার প্রভাব দিনে দিনে প্রকট হয়ে উঠছে। ছোট পরিসরে এ বিষয়ে লেখা সম্ভব নয়। এছাড়া এখন  লম্বা লেখা কেউ পড়ে না। শুধুমাত্র শুভাকাঙ্ক্ষী শুভানুধ্যায়ী ও অনুসন্ধিৎসু পাঠক আগ্রহ নিয়ে পড়ে।

করোনা মহামারী পরবর্তী সময়ে মানুষের মনস্তাত্ত্বিক জগতে ব্যপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বিশেষ করে মিশিগানে বসবাসরত বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর জীবন যাত্রায় এর প্রভাব লক্ষনীয়। সামাজিক, রাজনৈতিক , পারিবারিক ও ব্যক্তিগত জীবনে হিংসা আর রেষারেষি চরম আকার ধারণ করেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে সভা সমিতি ও ব্যক্তি পর্যায়ে এর প্রভাব লক্ষণীয়। কে কাকে কিভাবে কোণঠাসা করে রাখতে পারে সে চেষ্টা প্রতি নিয়ত করছে। এ ক্ষেত্রে এক শ্রেণীর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মানুষ আগুনে পেট্রল ঢালছে। যার সাথে যার মতবিরোধ বা রাজনৈতিক ভিন্নতা আছে , তাকে ই সে সামাজিক ও মানষিক ভাবে নাজেহাল করার চেষ্টা করছে। নানা ভাবে অশালীন অবান্তর কথা বার্তা বলে নাস্তানাবুদ করার চেষ্টা করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, টেলিফোন ব্যবহার করে একে অন্যকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করছে।

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো আজ যে শত্রু কাল বন্ধু হয়ে যাচ্ছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে শত্রুর শত্রু বন্ধু হয়ে যাচ্ছে।আবার শত্রুর সাথে বন্ধুর সম্পর্ক থাকলে সেও বিনা অপরাধে শত্রু হয়ে যাচ্ছে। আমার সাথে পরিচিত এক লোক সারাক্ষণ একজনের বিরুদ্ধে দারুন বিষোদগার করতো ইদানিং দেখছি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে প্রচুর তৈল মর্দন করছে! সেলুকাস!

মানুষ হিসেবে আমরা কেহ ই দোষ ক্রুটির উর্দ্ধে নই। আমার নিজের ও অনেক ঘাটতি আছে ,দোষ আছে। কিন্তূ মনে রাখতে হবে আমার কাজের কারণে যেন সমাজের কোন ক্ষতি না হয়। এলাকার কোন বদনাম না রটে। আমার রাজনৈতিক বিশ্বাসের সাথে আপনার দ্বিমত থাকতে পারে। ভুল বুঝাবুঝি হতে পারে , এটাই স্বাভাবিক। আমাদের কে পরমত সহিষ্ণু গণতান্ত্রিক ও সংবেদনশীল হতে হবে।

পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ সহমর্মিতা সহযোগিতা একটি সমাজ কে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যায়। আমাদের কে অবশ্যই ব্যকতি স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হবে। শুধু মাত্র পদ পদবী নিয়ে লড়াই করে সাময়িক তৃপ্তি পাওয়া যায় বটে কিন্তূ সমাজ কে কিছু দেয়া যায় না।

আমাদের সবাইকে মাথায় রাখতে হবে একটি নতুন দেশে নতুন সমাজ বিনির্মাণের প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। বর্তমান সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের নাগরিক আমরা। আমাদের কর্মকাণ্ডের উপর অনেকাংশে নির্ভর করবে আমাদের আগামী প্রজন্মের নিরাপদ ভবিষ্যত। আমরা না বুঝে অনেকেই স্পর্শ কাতর অনেক বিষয়ে জড়িয়ে পড়ি। এতে করে আমেরিকান সমাজে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের এতে বিরাট ক্ষতি হচ্ছে।

মনে রাখতে হবে আমাদের দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের সময় এখন সসম্মানে নিরাপদে থাকা। নিজের পরিবার কে শিক্ষা দীক্ষায় মজবুত করার মাধ্যমে সমাজ তথা রাষ্ট্রকে এগিয়ে নেয়া। যাতে করে আগামী প্রজন্ম মাথা উঁচু করে এদেশে সম্মানের সাথে বসবাস করতে পারে।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  

All Rights Reserved ©2024