শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মিশিগানে জনপ্রিয় বাংলাদেশী ব্লগার ওয়াহিদা

ফারজানা চৌধুরীঃ যুক্তরাষ্ট্র  মিশিগান স্টেটের জনপ্রিয় একটি মুখ ও নাম ওয়াহিদা মিয়া, যিনি ওয়াহিদা’স টাইনি ওয়ার্ল্ড ইউটিউব চ্যানেল এর মাধ্যমে লাখ মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন।

তিনি বাংলাদেশের সকল নারী ভ্লগারের মধ্যে প্রথম সারির একজন সফল ভ্লগার। নিজের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে ওয়াহিদা টাইনি ওয়ার্ল্ড নামটি ব্যবহারের কারণে তিনি লক্ষ লক্ষ ভক্তের কাছে ওয়াহিদা’স টাইনি ওয়ার্ল্ড নামেই পরিচিত।

ওয়াহিদার জন্ম বাংলাদেশের সিলেট জেলায়। সিলেটের মাটিতেই শৈশব, কৈশোর কাটিয়েছেন। সিলেট শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া থেকে এস এস সি, এম সি কলেজ থেকে এইচ এস সি( বিজ্ঞান বিভাগ), সিলেট মেট্রিপলিটন ইউনিভার্সিটির থেকে বি বি এ তৃতিয় বর্ষে থাকা কালিন বিয়ে হয়ে যায়। বৈবাহিক সুত্রে যুক্তরাষ্ট্রে ওয়াহিদার পদচারনা।

ওয়াহিদার শুশুড় বাড়ির সবাই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসি। আমেরিকা আসার পর পড়াশোনা চালিয়ে যান। বড় ছেলে আদিয়ানকে নিয়ে সংসার ধর্ম পালন করে পড়াশোনা করা অনেক কঠিন ছিল। তবুও থেমে থাকেন নি ওয়াহিদা। এখানে জেনারেল এডুকেশন এর উপর ইসোসিয়েট, এবং রেজিস্টার্ড নার্সিং এর উপর এসোসিয়েট করেন। এক বছরের বেশি সময় ব্যাংকে ও চাকরি করেন।ওয়াহিদা বলেন, নিজের অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর হাজবেন্ডের সাপোর্ট আর আল্লাহর রহমত থাকলে মেয়েরা যেকোন কিছুই করতে পারে এবং সকল বাধা অতিক্রম করতে পারে।

ছোটবেলা থেকেই ওয়াহিদা সংস্কৃতিমনা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান যোগদান করেছেন এবং অনেক পুরস্কার ও অর্জন করেছেন। সিলেট রোটারি ক্লাব আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ বক্তার ও খেতাব পেয়েছেন তিনি।ওয়াহিদা বলেন, আমি ছোট বেলা থেকেই ভালবাসার কাঙাল আর চাইতাম সবার ভালবাসা পেতে। খুব স্বপ্ন দেখতাম যাতে আমার নামটা কোন ভাল কাজের দ্বারা সবার কাছে পরিচিত হোক। আমার মৃত্যুর পর ও যেন মানুষ আমার নামটা মনে রাখে। কিন্তু আমার স্বপ্ন যে এভাবে পূর্ণ হবে তা কল্পনার ও করিনি। মানুষের মুখের যখন শুনি আমার ভ্লগ দেখে উপকার পান, রেসিপি ট্রাই করেন, আনন্দ পান তখন সত্যিই খুব ভাল লাগে।

ওয়াহিদা বলেন, ভ্লগিং এর শুরুর দিকে পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে অনেক বাধা, বিপত্তি অতিক্রম করতে হয়েছিল। কারন অনেকের ই এই ব্যাপারে ধারনা ছিলনা। কিন্ত এখন অনেক গ্রহনযোগ্যতা বেড়েছে। ভ্লগিং করে যে ঘরে বসে কিছু করা যায়, অন্যকে অনুপ্রাণিত করতে পারা যায়, অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে পারা যায় তা এখন কারোরই অজানা নয়।

ওয়াহিদা আরো বলেন, আমাকে দেখে এখন হাজারো নারী স্বপ্ন দেখে ভাল কিছু করার, নিজেকে স্বাবলম্বী করার। আমার ফেসবুক গ্রুপ ওয়াহিদা’স টাইনি ওয়ার্ল্ড এ প্রতি শুক্রবার নতুন সব বোনদের চ্যানেল লিংক শেয়ার করার সুযোগ দিয়েছি। সেখানে হাজারো লিংক শেয়ার করা দেখলে নিজের মনটা খুশিতে ভরে যায়। আমাদের কমিউনিটির লোকাল বিজনেস ও যাতে পরিচিতি পায় সেটা ও খেয়াল রাখি ঐ গ্রুপে।

বাচ্চারা ছোট থাকায় অনেক কাজ ই আপাতত স্থগিত রেখেছেন। ওরা রড় হলে কমিউনিটির জন্য অনেক কিছু করার ইচ্ছা আছে। তার চ্যারিটি গ্রুপ “কাইন্ড হার্টেড পিপলস” কে ও সামনে এগিয়ে নেওয়ার ও স্বপ্ন দেখেন। একটা সময় এই গ্রুপের মাধ্যমেই বাংলাদেশের অনেক দুঃখি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

বাংলাদেশকে এবং বাংলাদেশের মানুষকে প্রচণ্ড মিস করেন তিনি। ওয়াহিদা বলেন, বাংলাদেশকে খুব মিস করি। প্রতিটি ভ্লগে আমার টাইনি ওয়ার্ল্ডের সদস্যরা আমাদের দেশে যাওয়ার অপেক্ষা করেন। নিজেকে পরম সৌভাগ্যবান মনে করি আর আল্লাহর অশেষ শুকরিয়া আদায় করি সবার এতো ভালবাসা পাওয়ার জন্য। সবার ভালবাসা নিয়ে এভাবেই সামনে এগিয়ে যেতে চাই।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  

All Rights Reserved ©2024