শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

টাইমস স্কয়ারে হামলার পরিকল্পনা: মার্কিন আদালতে বাংলাদেশি যুবকের কারাদণ্ড

টাইমস স্কয়ারে হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে নিউইয়র্কে আটক হওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুবক আশিকুল আলমকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে আশিকুলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালতে নিজে থেকেই অপরাধ স্বীকার করায় বিচারিক সমঝোতা অনুযায়ী আশিকুলকে পাঁচ বছরের দণ্ড ভোগ করতে হবে।

গত ১৭ ডিসেম্বর শুক্রবার ব্রুকলিনের ফেডারেল আদালতে ইউএস ম্যাজিস্ট্রেট রবার্ট এম লেভির আদালতে আশিকুল জ্ঞাতসারে সিরিয়াল নম্বরহীন আগ্নেয়াস্ত্র নিজের মালিকানায় নিয়ে আসার অপরাধ স্বীকার করেছেন।

দণ্ড ভোগ শেষে তাকে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আদালতের আদেশ মেনে নিয়েছেন আশিকুল আলম।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মামলার রায় ঘোষণার পর ইউএস অ্যাটর্নি ব্রিয়ন পিস বলেন, আমেরিকার লোকজনকে দেশে ও দেশের বাইরে নিরাপত্তার মধ্যে রাখা তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। সন্ত্রাসী অভিযোগে অভিযুক্ত আশিকুল আলম স্বেচ্ছায় অপরাধ স্বীকার করেছেন বলে ব্রিয়ন পিস তার বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, টাইমস স্কয়ারে হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে ২০১৯ সালের জুন মাসে আশিকুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আটকের পর আদালতে তার বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগ আনা হয়। ২০১৯ সালের ৬ জুন আটকের একদিন পর ব্রুকলিনের ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে আশিকুলকে হাজির করা হয়।

আদালতে আইনজীবী জেমস ডারো তার মক্কেলকে দুই লাখ ডলার মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানান। অনুরোধ করেন, কারাগারে না রেখে তাকে গৃহবন্দী করে পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য।

ডারো আরও জানান, আশিকুল তার মা-বাবার সঙ্গেই থাকেন এবং তারা বন্ডে স্বাক্ষর করার জন্য প্রস্তুত আছেন। তবে আদালতে সংক্ষিপ্ত শুনানির পর বিচারপতি চেরিল পোলাক আশিকুলকে জামিন না দিয়ে আটক রাখার নির্দেশ দেন।

ব্রুকলিনের ফেডারেল আদালতে দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, আশিকুলের কাছ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া দুটি গ্লক ১৯ আধা স্বয়ংক্রিয় পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। এর পরই তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এক কর্মকর্তা জানান, আশিকুলকে কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। একজন গোয়েন্দা ছদ্মবেশে তাকে অনুসরণ করছিলেন। ওই গোয়েন্দার সঙ্গে আশিকুলের কথাও হয়েছে। দুজনের সাক্ষাতে তিনি নাইন ইলেভেন হামলাকে সমর্থন করেন বলে জানিয়েছিলেন। হামলায় সুইসাইড ভেস্ট ও হাতবোমার ব্যবহার নিয়েও আলোচনা করেছিলেন তিনি।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি রিচার্ড ডোনোঘুয়ে এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘অভিযোগ অনুযায়ী আশিকুল আলম আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের হত্যা ও টাইমস স্কয়ারে বেসামরিকদের ওপর হামলা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অবৈধ অস্ত্র কিনেছিলেন। তিনি টাইমস স্কয়ার কিংবা এক মার্কিন সরকারি কর্মকর্তাকে হত্যার জন্য ওয়াশিংটনে হামলার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, ২০১৯ সালের এপ্রিলে পেনসিলভানিয়ায় ছদ্মবেশী ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল আশিকুলের। তিনি জানিয়েছিলেন, হামলার আগে চোখে লেজার চিকিৎসা করাবেন। যেন সে সময় চশমা পরতে না হয়। মিডিয়া যেন তাকে ‘অন্ধ সন্ত্রাসী’ নাম না দিতে পারে।

টাইমস স্কয়ারে হামলার পরিকল্পনার সময় আশিকুলের বয়স ছিল ২২ বছর। তখন তিনি বাংলাদেশিবহুল জ্যাকসন হাইটসেই বসবাস করতেন। অভিবাসন সূত্র অনুসারে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ডধারী বলে জানা গেছে।

 

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  

All Rights Reserved ©2024