দীর্ঘ ভারত সফরে এসেও তালেবান মন্ত্রীর তাজমহল দেখা হলো না

সাত দিনের দীর্ঘ ভারত সফরে এসেছেন আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম কোনো তালেবান মন্ত্রীর ভারত সফর। তালেবান সরকারকে ভারত এখনও স্বীকৃতি না দিলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে পূর্ণ প্রটোকল দেয়া হয়েছে। শুক্রবার ভারতের আসার পর মুত্তাকি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের পর দুই দেশ যৌথ ঘোষণাও দিয়েছে। আফগানিস্তানে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য নিয়ে মুত্তাকি সোমবার থেকে শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরই ফাঁকে শনিবার তিনি দেওবন্দ ঘুরে এসেছেন। তবে রবিবার  আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির আগ্রা সফর নির্ধারিত  থাকলেও তা শেষ মুহূর্তে বাতিল করা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর তাজমহল দেখতেই আগ্রা যাওয়ার কথা ছিল। তবে ইচ্ছে থাকলেও এ যাত্রায় তাজমহল দেখা হয়ে উঠল না।

আগ্রার প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সফর বাতিলের কোনও কারণ উল্লেখ করেননি। আগ্রার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সোনম কুমার সংবাদ সংস্থাকে বলেন, সফর বাতিলের নির্দেশ দিল্লি থেকে এসেছে। তবে তিনি কোনও নির্দিষ্ট কারণ জানাতে অক্ষমতা প্রকাশ করেছেন।

শনিবার  উত্তরপ্রদেশের দারুল উলুম দেওবন্দে  গিয়ে খুশি  হয়েছেন মুত্তাকি। ভারত সফরে এসে কেন  ওই শিক্ষাক্ষেত্রে গেলেন তালেবান মন্ত্রী তা নিয়ে ভারতে প্রবল কৌতুহল তৈরি হয়েছে। সূত্রের খবর, দারুল উলুম দেওবন্দের সঙ্গে বিশেষ যোগসূত্র রয়েছে তালেবানের।

গোটা দক্ষিণ এশিয়াতেই মুসলিমদের কাছে এই দারুল উলুম প্রভাবশালী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মুত্তাকিকে সেখানে  স্বাগত জানান দারুল উলুমের উপাচার্য আবুল কাসিম নোমানি-সহ কয়েক জন।  মুত্তাকি জানান, কাবুল থেকে তালেবান প্রশাসনের প্রতিনিধিরা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভবিষ্যতেও আসবেন। দুইয়ের মধ্যে সংযোগ তৈরি হবে।

তালেবানের কাছে এই দারুল উলুম গুরুত্বপূর্ণ।  তালেবানের অনেক শীর্ষ কমান্ডার পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার দারুল উলুম হাক্কানিয়ায় পড়াশোনা করেছেন। দেওবন্দের আদর্শেই গড়ে তোলা হয়েছিল সেই প্রতিষ্ঠান। হাক্কানিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মৌলানা আবদুল হক। তিনি নিজেই দেওবন্দের দারুল উলুমে পড়াশোনা করেছিলেন। সেখানে পড়িয়েও ছিলেন। সে সময় দেশভাগ হয়নি। সেই আবদুলের পুত্র সামি-উল-হক ‘তালেবানের জনক’ বলে পরিচিত। মনে করা হচ্ছে, সে কারণেই ভারত সফরে এসে দেওবন্দের ট্রেন্ড উলুমে ঘুরে গেলেন মুত্তাকি।

Tag :

দীর্ঘ ভারত সফরে এসেও তালেবান মন্ত্রীর তাজমহল দেখা হলো না

আপডেট ১০:১৫:৩৭ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫

সাত দিনের দীর্ঘ ভারত সফরে এসেছেন আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম কোনো তালেবান মন্ত্রীর ভারত সফর। তালেবান সরকারকে ভারত এখনও স্বীকৃতি না দিলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে পূর্ণ প্রটোকল দেয়া হয়েছে। শুক্রবার ভারতের আসার পর মুত্তাকি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের পর দুই দেশ যৌথ ঘোষণাও দিয়েছে। আফগানিস্তানে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য নিয়ে মুত্তাকি সোমবার থেকে শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরই ফাঁকে শনিবার তিনি দেওবন্দ ঘুরে এসেছেন। তবে রবিবার  আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির আগ্রা সফর নির্ধারিত  থাকলেও তা শেষ মুহূর্তে বাতিল করা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর তাজমহল দেখতেই আগ্রা যাওয়ার কথা ছিল। তবে ইচ্ছে থাকলেও এ যাত্রায় তাজমহল দেখা হয়ে উঠল না।

আগ্রার প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সফর বাতিলের কোনও কারণ উল্লেখ করেননি। আগ্রার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সোনম কুমার সংবাদ সংস্থাকে বলেন, সফর বাতিলের নির্দেশ দিল্লি থেকে এসেছে। তবে তিনি কোনও নির্দিষ্ট কারণ জানাতে অক্ষমতা প্রকাশ করেছেন।

শনিবার  উত্তরপ্রদেশের দারুল উলুম দেওবন্দে  গিয়ে খুশি  হয়েছেন মুত্তাকি। ভারত সফরে এসে কেন  ওই শিক্ষাক্ষেত্রে গেলেন তালেবান মন্ত্রী তা নিয়ে ভারতে প্রবল কৌতুহল তৈরি হয়েছে। সূত্রের খবর, দারুল উলুম দেওবন্দের সঙ্গে বিশেষ যোগসূত্র রয়েছে তালেবানের।

গোটা দক্ষিণ এশিয়াতেই মুসলিমদের কাছে এই দারুল উলুম প্রভাবশালী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মুত্তাকিকে সেখানে  স্বাগত জানান দারুল উলুমের উপাচার্য আবুল কাসিম নোমানি-সহ কয়েক জন।  মুত্তাকি জানান, কাবুল থেকে তালেবান প্রশাসনের প্রতিনিধিরা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভবিষ্যতেও আসবেন। দুইয়ের মধ্যে সংযোগ তৈরি হবে।

তালেবানের কাছে এই দারুল উলুম গুরুত্বপূর্ণ।  তালেবানের অনেক শীর্ষ কমান্ডার পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার দারুল উলুম হাক্কানিয়ায় পড়াশোনা করেছেন। দেওবন্দের আদর্শেই গড়ে তোলা হয়েছিল সেই প্রতিষ্ঠান। হাক্কানিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মৌলানা আবদুল হক। তিনি নিজেই দেওবন্দের দারুল উলুমে পড়াশোনা করেছিলেন। সেখানে পড়িয়েও ছিলেন। সে সময় দেশভাগ হয়নি। সেই আবদুলের পুত্র সামি-উল-হক ‘তালেবানের জনক’ বলে পরিচিত। মনে করা হচ্ছে, সে কারণেই ভারত সফরে এসে দেওবন্দের ট্রেন্ড উলুমে ঘুরে গেলেন মুত্তাকি।